পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

খাওয়ালেন। অনেকদিন পরে যেন সভ্যজগতে এসেচি বলে মনে হচ্চে। আমরা তিনটের সময়ে মোটরে রওনা হই, বরাইবরেতে কারো নদী পার হয়ে জামদার পথে চল্লাম হাটগামারিয়া। আজ হাটবার গোপালনগরের, জগন্নাথপরের হাট দেখে আমার সেকথা মনে পড়লো। পঞ্চা মাস্টার বেগােন বিক্লিক করাচে ইদারার ওপরে বসে। রোদ রাঙা হয়ে আসচে। পিছনে দেখা যাচ্চে কেউনঝর রাজ্যের পাহাড় ও বন, বামে কোলহান ও সারেন্ডার শৈলমালা। হাটগামারিয়া এসে পরেশাবাবরে আপিসে আমরা চা খেলাম--তারপর কেদাপোসি সেন্টশনে এলাম ট্রেন ধরতে। আমি এখান থেকেই যাবো ঘাটশিলায়। আজই যাবার জন্যে মন উদিবগ্ন। মণীন্দ্র নন্দীর নীতি আলাপ করলেন। তিনি এখানে চীনামাটির খনির ম্যানেজার। "আদশ হিন্দ হোটেল” নাকি তাঁর খব ভাল লেগেছে। ট্রেনে উঠলাম, লেখা আছে ইন্টার ক্লাস, কিন্তু কাজে সেকেন ক্লাস, বেশ আরামে বিবেকানন্দের ‘ভক্তিযোগ’ পড়তে পড়তে এলাম— মাঝে মাঝে জানােলা দিয়ে ধসের দিগন্তের দিকে চেয়ে ভাবি। এতক্ষণ হাট শেষ হয়ে গেল, লোকেরা সব বাড়ী ফিরচে । লিচতলায় আন্ডা বসেচে। বিরশার সঙ্গে আবার দেখা চাইবাসা সেন্টশনে। ডাকআরদালি কামরায় এসে সেলাম করে বকশিশ চাইলে । বড় দেরি করে ট্রেন টাটায় এল। রাঁচি এক্সপ্রেস ছেড়ে গিয়েচে– সারারান্ত্রি ওয়েটিং রমে চেয়ারে বসে কাটালাম। নৈহাটির এক গার্ড এখানে কি করাচে, তার সঙ্গে সারারাত গলপ করি। দজন ছোকরা ওয়েটিং রমে আমায় চিনতে পেরে বসবার জায়গা করে দিল । রাত শেষ হয়ে গেল। ৬টায় ট্রেন এল, ভীষণ শীত। ঝিমতে ঝিমতে ঘাটশিলায় এলাম। মনে খাব আনন্দ। ষোল দিন পরে বাড়ী ফিরচি, ঘি ও ধনো হাতে ঝলিয়ে চলেচি। শান্ত এসেচে। বম্পেব থেকে, প্ল্যাটফৰ্ম্মেম দেখা। ও গেল পটার কাছে। কল্যাণীরা ঘি দেখে খাব খশি। বাড়ী আসতে সবাই খশি। উষা চিঠি দিয়েচে কাশমীর থেকে, অজিতবাব চিঠি দিয়েচেন রাঙামাটি (চট্টগ্রাম) থেকে-বাড়ী এসে পেলাম। পরের দিন সন্ধ্যায়। শচীন ও ফণির সঙ্গে বসে বসে চালভাজা খাচ্ছিলাম। সারেন্ডাতে কত ভাল জায়গা দেখোঁচি তার একটি তালিক। ওদের কাছে বল্লাম। প্রথমে ধরি কুমডির পাশে কোইনা নদী। ২য়, শশাংদাবর : ৩য়, থলকোবাদ বাংলো, ৪র্থ, জাতি-সিরাং (Matrock) ৫ম ভানগাঁও ও বোনাই সীমান্ত ; ৬ষ্ঠ, বাবডেরা ; ৭ম, বনশ্ৰী ও বাবডেরা থেকে সামটার তেমাথার পথ ; ৮ম, হেন্দেকুলি ক্যাম্প ও তৎপবে সামটা নালার। loop ৯ম, শিশিরদা জলা ও গহন্বয় : ১০ম, থলকোবাদ বাংলো থেকে বনপথে কোইনা নদী ও তীরবতী বনভূমিতে কোইনা নদীর loop; ১১শ, টোয়েব, জলপ্রপাত ও সেখানে যাবার বনপথটি; ১২শ, বিটকেলসোয়া গ্রাম ও সেখানে যাওয়ার পথটি ; ১৩শ, মহাদেবশাল ঝর্ণা ও কোল বোংগা গ্রাম : ১৪শ, নসিংহদাস বাবাজীর আশ্রম, মনোহরপর ; ১৫শ, হেন্দেসিরি ; ১৬শ, ছোটনাগরা বাংলো; ১৭শ, সলাই বাংলো : ১৮শ, সলাই থেকে আংকুয়া যাবার পথ ও পাশে কোইনা নদীর পাষাণময় গভর্দ ; ১৯শ, চিড়িয়া খনি ; ২oশ, Lyall's look-out, রামদাঁতনের কাঁটালতা ভেঙে সেখানে গিয়েছিলাম ; ২১শ, উসরিয়া ঝর্ণা : ২২শ, বড় বড় শালের preservation plot ; ২৩শ, আংকুয়া জলপ্রপাত ; ২৪শ, সেচনের পয়োপ্রণালী ; ২৫শ, বড়া নাগরা ও ছোট নাগরা (ঢোল দটি ও অভিরাম টাং রাজার ভাঞ্চনমন্দির) ; ২৬শ, পেংগা যে কুটিরে মিঃ সিনহা। ১৯২৫ সালে ছিলেন। 66