পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাস্টার এল, শশধর মহারী এল। সারে"ডা ফরেস্টের গলপ করি ওদের কাছে ; চা, খেয়ে সন্ধ্যার আগে বাড়ী চলে এলাম। যািগল ময়রার দোকানে একটা লেডিকেনির দাম চাের আনা—তাই খেয়ে একটা জলযোগ করি। এই সেই সময়-যে সময় ১৯৩৭ সালে আমি পাটনায় গিয়েছিলাম সভা করতে। শিবপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ী। মোজার্টের minuet in c minor শািনছিলাম গঙ্গার ধারের বালির চড়ার দিকে চোখ রেখে। উড়ে বেয়ারা তত্ত্ব নিয়ে এসেছিল খকুদের বাড়ী—সে সব দিন অতীতের গহন কুজীবটিকায় অস্পষ্ট হতে চলেচে। কোথায় আজ ‘খক। পরদিন সকালে কুঠীর মাঠে বেড়াতে গেলাম, গাছে গাছে কুল পোকেচে —মনে আসছে। ১৯o৪ সালের সেই ‘সরস্বতী পজা। আমার একেবারে শৈশব তখন-অসম্পন্ট ‘মনে হয় একটা একটি। কুঠীর মাঠের গাছপালা বনঝোপের কি চমৎকার শোভা । পেয়ারাতলায় বসে ভগবানের কথা চিন্তা করলাম। কাছিম কাটচে সাঁইবাবলা তলার ঘাটে। ওপারের ঘাটে গিয়ে স্নান করলাম। তারপর বধো ঘোষের খামারে আমার ধান ঝাড়া ও মাড়া হচ্চে, সেখানে গেলাম। একজন হ্যাটপরা লোক যাচ্চে হরিপদদার বাড়ীতে-তাকে ডেকে এনে বসালাম। হাটে গেলাম - লোকজনের সঙ্গে কথা বলতে বলতে মািখ ব্যথা।। তিনটি ঘটনা বড় ভাল লাগলো। এবার গ্রামে। বড়-চারা আমগাছ। তলায় নিবিড় ঝোপে শািন্ধ পত্ররাশির ওপর একা বসে বনপক্ষেপ সবাসের মধ্যে রোজ দােপরে কত কথা চিন্তা করতুিম, কত কি পাখি ডাকত বনে, ভগবানের দানের মত কোথাও আমড়া পড়তো, গান গাইতুম ‘তব আসন পাতা এ বনত লে-আমারই তৈরী গান, এবং ওর ওই একটিই লাইন। গান তৈরী করতে তো জানি না! দ্বিতীয় ঘটনা-বিকেলে গিয়েচি ঘামিয়ে উঠে বরোজপোতার বাঁশবাগানে বেড়াতে । শকানো বাঁশের পাতা পড়ে আছে সব্বত্র। হঠাৎ দেখি এক অপব্ব ছবিসিদর-কৌটো আমগাছটার পাশে একটা চারা সজনে গাছের একটা মাত্র ডালে থোলো থোলো সজনে ফল ফটোচে, তারই পাশে সিদর-কৌটো আমডালে একটা চিল বসে আছে—ওদের ওপরে নীল আকাশ। যেন চীনা চিত্রকারের ছবি একখানা। কতক্ষণ মগধ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম, পা আর ওঠে না। ফিরে এসে ইন্দর সঙ্গে আবার বারিকের বাড়ী গোলম চালকীতে। সায্য অস্ত যাচ্চে, আমি ওর উঠোনে গরর গাড়ীর ওপর বসে তামাক খাচ্চি কলাকে হাতে। তারপরে পাকা রাস্তার ওপরে মচিপাড়ায় সজনে সাঁকোতে গিয়ে বসে আমডোবের গলপ শনি ইন্দর মখে। তৃতীয় ঘটনা এইটিই। কোথায় টাটানগরের সভা সেদিনকার, কোথায় সারেন্ডা বনকান্তারের শৈলমালা - আর কোথায় চালকী গ্রামে আমার প্রজা বারিকের বাড়ীতে গরর গাড়ীর ওপর বসে তামাক 2T3T - পরদিনও বিকেলে বারিকের বাড়ী যাবার আগে প্রমোদের বাবার সঙ্গে কথা বলি। তিনি তামাক খাওয়ালেন। অন্ন বলে মেয়েটির শবশরে। কত নিন্দে করলেন কুটিব বাড়ীর। উনি জাবরে পড়ে আছেন, ওঁকে দেখে না-ইত্যাদি। বারিকের বাড়ী গিয়ে খাব বিকাবাঁকি করলাম ধান দিচ্চে না বলে। ওখান থেকে সোজা চলে এলমে কুঠির মাঠে অপব্ব বনপথে, কণ্টক লতার পক্ষেপর সগন্ধের মধ্যে। আগে বসলাম নদীর তীরে নিবারণ ঘোষের বেগােন ক্ষেতের জমিতে, সেখানে আর বছর আমি আর কল্যাণী নীতি শাক তুলতে আসতুম। তারপর এখান থেকে মাঠের মধ্যে জলার ধারে। রোদ একেবারে রাঙা হয়ে এসেচে, শিমল গাছে মকুল দেখা দিয়েচে, শীত আজ অনেক কম। GG