পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কুল পেকোঁচে গাছে—অনেক পেড়ে খেলম—কিছ নিয়ে এলাম ইন্দ রায়ের ছেলেমেয়ের জন্যে। ফিরবার পথে অন্ধকার সন্ধ্যায় আমাদের ঘাটে গিয়ে দাঁড়ালম-ওপারে একটি মাত্র তারা জবল জবল করচে সন্ধ্যা-আকাশে। যেন আমি ১৯৩৪ সালের বড়দিনের ছটিতে বারাকপাের এসেছি, খকু রোজ সন্ধ্যায় আমার কাছে স্লেট পেন্সিল বই নিয়ে পড়তে আসে-আমি বসে বসে মেটে প্রদীপের আলোয় ‘দাম্পিটপ্ৰদীপ’ লিখাতুম। শ্যামাচরণ দা’র বাডী বসে গলপ করে এদিন ওদের বাড়ীর খিড়কির পথে আমাদের পরোনো ভিটের সামনে দিয়ে ফিরি। যেমন ফিরতুম বাল্যকালে, যখন মা ছিলেন, বাবা ছিলেন-আমাদের পরোনো ভিটের বাড়ীটা বজায় ছিল। সে সব কত কালের কথা ! পরদিন আবার সকালে বড় চারা আমতলায় বসলাম বনের মধ্যে শক্ষিক পাতার রাশির ওপর গামছা পেতে। এই বনের মধ্যে নিভৃতে চাপ করে বসে বন-বিহঙ্গের কাকলী শািনতে আমার যে কি ভাল লাগে। জীবনকে গভীর ভাবে অনভব করি এই নিজজন বনতলে একা বসে। ‘আনন্দন্ধেব খলিবমাণি সব্বণি ভুতানি জায়ন্তে"- উপনিষদের বাণীর সার্থকতা ও সভ্যতা এখানে বসে বঝতে পারি। হাটে গিয়ে পাটালি কিনলাম। ফিরে এসে সেদিন সন্ধ্যায় যে অপব্ব অভিজ্ঞতা হোল। -তা এ ক'দিনের সব অভিজ্ঞতাকে ছাড়িয়ে গেল। সন্ধ্যায় বনভূমিপ্রান্তে ক্ষীরপলি গাছের পেছনটাতে একা বসেচি চাপ করে—সামনে ছোট এড়াঞ্চি। ফলে ভরা ঝোপঝাপ, সাঁইবাবলা গাছের পত্রিশীষ বনপল্প-সবাস, পাখীর ডাক-সন্ধ্যায় অন্ধকার নেমে আসচে, বনভূমি আজও তেমনি সর্বপ্নমাখা—কি সন্দির মধমাখা সন্ধ্যা ! কল্যাণী আমায় বলতো-মানকু, এখানে বসবো! এই মাঠে। সেকথা মনে পড়লো এই সন্ধ্যায়। তার চোখে অসীম নিভািরতার দণ্টি। কলকাতায় এলাম। পরদিন গরর গাড়ীতে। তিন আমার সঙ্গে এল রাণাঘাট সেন্টশনে কচ কুমড়ো নিয়ে ওর দাদার শবশঙ্কুরবাড়ীর জন্যে। মাঝের গাঁয়ে মহীতোষ দা’র সঙ্গে সেন্টশনে দেখা অনেকদিন পরে। কলকাতা থেকে আমতলায় গেলাম শবশরিবাড়ী ; সেই জাণ্ডিগপাড়া স্কুলে যখন কাজ করতুম, গৌরী মারা গিয়েছিল - সেই সব শোকাচ্ছন্ন দিনের ছাপ আছে এই সব লাইনের গাছে পালায় মাঠে। সেই পথ দিয়েই আবার শবশরিবাড়ী যাচ্ছি। এতকাল পরে। খব। আশচয্য না ? কলকাতায় এবার দজন লোকের সঙ্গে দেখা হোল বহকাল পরে। খেলাত স্কুলের পরোনো হেডমাস্টার ক্ল্যারিজ সাহেব,--আজকাল সে একজন ইহদী স্কুলের হেডমাস্টার বউবাজারে। একেই নিয়ে ক্লাকওয়েল সাহেবের সন্টি অনবৰ্ত্তন'-এ। আর ভাগলপরের অস্বিকা ঘোষ যার সঙ্গে অনেকদিন অ্যাগে ভাগলপর থেকে দেওঘর হোটে গিয়েছিলাম। 'অভিযাত্রিক’এ। এ ঘটনার উল্লেখ করেছি। অশিবকাকে একখণড ‘অভিযাত্রিক উপহার দিলাম। ওর সঙ্গে ১৪ ॥১৫ বছর পরে দেখা হোল— ও দেখতে তেমনিই আছে। আজ সবাই মিলে চারখানা গররগাড়ী করে বনের পথে ধারাগিরি যাওয়া গিয়েছিল। সারাপথ এমন enjoy করেছি কি বলবো। কাশিদা ছাড়িয়ে লাল শালক ফোটা সেই বড় বিলটা, যেখানটার নাম ঢাং-জোড়, সেটা ছাড়িয়ে ধবলীর বন, তারপর বারডি। গ্রাম, তা ছাড়িয়ে বারডি ঘাট অর্থাৎ পাস, তারপর বাসাডেরা গ্ৰাম—একেবারে চতুন্দিকে áb”