পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মিঃ বারোজ তাঁবতে বসে মিঃ সিনহার সঙ্গে গলপ করচে। বল্লে-পথে বান্টির জন্যে মোটর পাঠাতে পারিনি, এখন পাঠাচ্ছিলাম। চা ও খাবার খেয়ে ধড়ে প্রাণ এল। রাত্রে একটি জ্যোৎসনা উঠলো। কি শোভাই হোল তাঁবর পেছনের পক্বতসানির বনের। শালগাছ নেই। এ বনে। কোদে, পড়াশি, শিবগাছ, কুল, কমপ্রিটাম লতা, বড় বড় বিরাটকার শিলাখন্ডের ওপর টেরি লতা ও মোটা চীহড়। লতার ঘন ঝোপ, আমলকী, নিম ইত্যাদি নিয়ে জঙ্গলটা। বৈচিত্ৰ্য আছে। এ বনে, একঘেয়ে শালবন বড় খারাপ। মিঠাই ঝর্ণার ওপারে লখাইড়ি গ্রামে খাড়িয়া জাতির বাস। তাদের মাদল বাজচে জ্যোৎস্না রাত্রে। এ একেবারে বন্য জায়গা, বারোজ বল্লে, বড় বনো হাতীর উপদ্রব। 'গত বৎসর বনাহসতীতে নিকটের কের-কোচ গ্রামের একটা লোককে মেরে ফেলেছিল। "কি সন্দির বানশোভা। জ্যোৎসনা পড়েচে উপত্যকার ওপারের আটকুশী শৈলশ্রেণীর এদিকের ঢালতে-এ যেন বনপরীর দেশটি। শিউলি গাছের জঙ্গল তাঁবর পেছনে শৈলসানতে। শরৎকাল হলে প্রস্ফটিতে শেফালির সৌরভ ভেসে আসতো শীতল নৈশ दा5I6न । এই যে লিখচি, সামনে পাহাড়ের মাথায় বর্ষার সাদা মেঘপঞ্জ জমেচে । তাঁবর দোর থেকে বড় চমৎকার দেখাচ্চে গাছগালোকে। গ্রীক ঐতিহাসিক হেরোডোটাসের larif (or GI C (5GT, "A nation's history has three stages. Success then as a consequence of success, arrogance and injustice; then as a consequcnce of these, downfall.' কাল সারাদিন বাল্টিতে তাঁবতে বসে। কোথাও বেরতে পারিনি। তাঁবার পেছনে লন্দাম, করম ও ধ। গাছ, একটা ধাতুপ। ফলগাছে প্রথম বসন্তের রাঙা রাঙা ফলে ফটেচে। পাহাড়ের সানতে জঙ্গলের ফাঁকে ফাঁকে বড় বড় শিলাখন্ড। যে কোনোটাতে আরাম করে বসে চিন্তা করা যায় বা লেখা যায়। কিন্তু বাদলাবটিতে সব ভিজে। সন্ধ্যায় বারোজ সাহেবের বাংলোতে বেড়াতে গিয়ে বসলাম খানিকক্ষণ। পােব আকাশের পাহাড়ের ওপর দিয়ে ভাঙা মেঘের ফাঁকে পণচন্দ্র উঠলো। মিসেস বারোজ বন্য হস্তীর গলপ করলে। এক পেয়ালা কোকো পান করে এই শীতে বেশ আরাম করে বনো হাতী ও মাতাল ভালকের গলপ শোনা গেল। আর বছর মাগড় গ্রামের নিকটবত্তী পথে একটা ভালকৈ পেট ভরে মহীয়া ফল খেয়ে যখন গাছ থেকে নামলো —তখন সে ঘোর মাতাল, টলতে টলতে চলেচে। রাত্রে ভীষণ ঝড় ও বাল্টি শার হোল। সারারাত্ৰি বন্টি। আজ সকালেও বমিট পড়ছিল। বেলা হলে আকাশ পরিস্কার হয়ে গেল। আমরা "বিকেলে মাগড় ও চেংশম গ্রামে বেড়াতে গেলাম। ডাইনের প্রকান্ড পাহাড়শ্রেণীর পাশ দিয়ে আসান পড়শির বনের ছায়ার পথ, বনে পিয়াল গাছের মকুল ধরেচে, বাতাসে আমি ও পিয়াল মকুলের সৌরভ, কালো কালো সত্যুপের ওপর টেরির জঙ্গল, বামে পোটরী ও কুন্দরকোটা পাহাড়-ওখানে নাকি একটা সোনার খনি ছিল, বিলিংহাম নামে এক সাহেবের। এখন খনির কাজ বন্ধ শািনলাম। ওই পাহাড়ের ওপর দিয়ে অসত আকাশের তলায় তলায় ময়রভঞ্জ যাবার পথ। আমরা যখন ফিরলাম তখন বেলা পড়ে এসেচে, বন্যা কুক্কট ডাকচে ডানদিকের শৈলসােনর গহন অরণ্যের মধ্যে। রাত্রে সন্দর জ্যোৎস্না উঠলো। আমরা তাঁবার পিছনের শৈলশ্রেণীর ওপরে একটা পাথরের চাতালে রাত দটো পৰ্যন্ত বসে আগনি জৰালিয়ে গলপ করলাম। ভালক ও বন্য হস্তীর ভয়ে (এবং শীতের জন্যেও বটে) আগমন জবালানোটা নিতান্ত দরকার। Uy R