পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শিলাস্তর থাকে থাকে। কাৎ-ভাবে এসে পড়েচে-প্ৰায় একশো ফন্ট কি দেড়শো ফন্ট উচিত। স্তরগলো একটার ওপরে একটা সাজানো, একটি থেকে আর একটি গানে নেওয়া যায়। দটি গহা আছে জলের ওপরেই, গত বৎসর নাকি এক খাড়িয়া পরিবার ওতে বাস করতো। আমরা যখন ফিরলাম, তখন সন্ধ্যা হয়ে এসেচে, সম্মখে অাঁধার ও রাত। বিভিন্ন পাবত্য নালায় ওপরকার পাথর চোখে দেখা যায় না, কোনোরকমে হোঁচটি খেতে খেতে পথ চলি। কিন্তু ঝকঝকে তারাভরা আকাশের মহিমময় রােপ দেখে সব কষ্ট ভুলে গেলাম। এদিকে বারোজ সাহেবের বাংলোতে ডিনার খাওয়ার কথা, রাত হোেল প্রায় সাড়ে আটটা তাঁবতে পৌঁছতে। ডিনার খেয়ে ফিরতে এগারোটা বেজে গেল। বারোজ বল্লেী, সন্ধ্যাবেলা তোমরা বাঘের ডাক শািনতে পেলে না। সামনের পাহাড়ে! সাড়ে ছাঁটার সময়ে খােব ডাকছিল বাঘ। আজ সকালে উঠে চা খেয়ে মিঠাই ঝর্ণার কাছে চকল-বাগাল গ্রামে খাড়িয়া জাতি দেখতে গিয়েছিলাম। দািবলবেড়া ছাড়িয়ে খানিকটা গিয়ে পথ উঠেচে পাহাড়ের ওপরে। ঘন বনের মধ্য দিয়ে পথ, একটা কি গাছের ডালে দটো চিল বসে আছে। ওপরে উঠতে উঠতে পা ধরে গেল—তখন একটা বড় পাথরের ওপরে বসলাম, একটা বড় মহীয়া গাছ সোজা উঠেচে দারের পাহাড় ও সমতলভূমির পটভূমিতে। ভগবানের নৈকট্য এসব জায়গায় যত অনভব করা যায়, এত কি কলকাতা কি টাটানগরে বসে সম্পভব ? টাটানগর কেন বললাম, সিং ভুমের বনে বাস করে তাঁবতে, টাটানগরের নাম করবো না। এটা অন্যায়। আমরা চড়াই পথে চলেচি, বনো বাঁশি, আমলকী, পাপড়া, ককািট, পড়াশি, মহীয়া গাছের তলা দিয়ে, কোথাও পথের পাশে কুচ ফলে আছে ঝোপে, কোথাও এক রকম হলদে ঘাসের ফল ফটে আছে। ঠান্ডা বাতাস বইচে, আকাশে কালো মেঘ । পাহাড়ের ওপর উঠে দজন খাড়িয়ার বাড়ী—তাদের মেয়েরা শািন্ধ আছে, আমাদের দেখে সোজা পালালো। তারপর আমরা গেলাম ঢািকল বাগালের বাড়ী। খড়ের ছাউনি, নিচ মাটির ঘর, এমন চমৎকার দশ্য চারিদিকে, শিলং কি কাসিয়ংএর বড়লোকের বাড়ীও এমন জায়গায় হলে গব্বের বিষয় হতে পারে। ঢািকলার ছেলে আনন্দপাের স্কুলে পড়ে। কাল রাত্রে ঢািকলর গরটা নাকি বাঘে মেরেচে। সামনের পাহাড়ে। সবটা খেয়েচে ? আমরা জিগ্যেস করি। সে বলে—উয়াকার মাড়িটা নিয়ে গেছে। বাকিটা ডাংরিটাতে রাখি গেলে! এটার নাম চরাই পাহাড়, ২১o৬ ফন্ট উচি। হিমালয়ের মত দশ্য চারিদিকে { একটা উচি। ডাংরির ওপর গিয়ে আমরা বসলাম, গ্রানিটের সক্ষমাগ্র চড়ার চারিপাশে, ভােঙ ভাঙা গ্রানিটের boulder-ফাঁকে ফাঁকে খড়, দহ-চার ঝাড় বন্যবাঁশি, একটা সাথীহীন মহীয়া। সামনের সমতলভূমির দশ্য এত উচ্চ থেকে বড় চমৎকার দেখাচ্চে। একটি সাঁওতাল তীরন্ধনক হাতে এসে হঠাৎ হাজির। তার নাম জিগ্যেস করলে নাম বলে না। জিগ্যেস করে জানা গেল ওর বাড়ী রাঙামাটিয়া গ্রামে, সে এবং তার দজন সঙ্গী এসেচে। বাঘে-মারা গরটার অন্ধভুক্ত দেহটা খাঁজে নিতে। এই গ্রানিট পব্বতচড়ায় আসলে সেটাই সে খাজতে এসেচে। আমাদের কোঁত হল পণ্য করবার অবকাশ নেই। ওর। ওই। একটা পরে আমরা আমাদের গ্রানিটি চড়ায় বসে দেখাঁচি, তিনজন সাঁওতাল অথবা হো নীচের বনে শািম্পক শালের পাতার রাশির ওপর দিয়ে মচ মচ করে হাঁটতে হাঁটতে S