পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অমরবাবার বাড়ী গিয়ে গল্পগজব করলাম রাত্রে। কোথায় দািবলবেড়া, ঘাটশিলা-আর কোথায় বারাকপাের! এক দিনের মধ্যে কোথা থেকে কোথায় এসে পডেচি—কোথায় চাকড়ি গ্রামে বাসেয়া সন্দারের সমিতি-প্রস্তর, কোথায় চরাই পাহাড়ের শিখর! কোথায় দোকা ও শালগা বন! আজ এ বারাকপরে আমম কুলের ঘন সবাস ভরা অপরাহের বাতাসে জানালা খালে দেখছি সামনের খড়ীমাদের বাঁশ ঝাড়ের মাথায় রাঙা রোদ, কোকিল ও কত কি পাখী ডাকচে— -আমি একটা ঘরে বসে লিখচি। শকিনো বাঁশপাতা-ঝরা পথের ওপর বৈকালের ছায়া নেমে এসেচে, ঘোট ফল ফটেচে আমার উঠোনে, ওদের বাঁশতলায়, আমি বসে বসে দেখচি। কল্যাণী গিয়েচে ফকিরীচাঁদের বাড়ী বৌভাতের নিমন্ত্রণ খেতে, মান ও নগেন খড়োর বৌয়ের সঙ্গে। এমন চমৎকার পরিপািণ বসন্তের মধ্যে বারাকপরে আসতে পারা একটা সৌভাগ্য। এত সগন্ধ বাতাসে, এত ঘোটফােল শকানো পাতা ছড়ানো বাঁশঝাড়ের তলায়। সকালের ঈষৎ শীতল বাতাসে যখন আমম কুলের সৌরভ ভেসে আসে, পাখী ডাকে—তখন মনে হয়, একটা যেন কিছ হবে, এমন দিনের শেষে বহত্তর কিছ, মহত্তর কিছ অপেক্ষা করে আছে যেন—আমার ছেলেবেলাতে ঠিক এই সময় মনের অকারণ উল্লাস অনভব করতুমি এমনি ধারা। কাল বিকেলে কুঠীর মাঠের রাস্তা ধরে আসতে আসতে হঠাৎ এসে পড়লাম শাঁখারিপকুরে বাঁশবনের ধারে। নক্ষত্ৰ উঠেছে আকাশে, আকাশের শকা পঞ্চমীর চাঁদ জবলজবল করচে, আমম কুলের ঘন সবাস সন্ধ্যার বাতাসে। কতকাল আসিনি শাঁখারিপকুরের বাঁশবাগানে-ছিরেপকুরের ওপাড়ের পথে-সেই ত্রিশ-বত্ৰিশ বৎসরের পরাতন বালাদিনগলি ছাড়া। বিশবশিলপীর অপব্ব সম্মিট এই পথিবী, এই পথিবীর বসন্ত, এই মানষের মন। আমি না। যদি থাকতুম, এ বসন্ত শোভা, এ শক্লিাপঞ্চমীর জোৎস্না কে আসবাদন করতো ? মানষের মনের মধ্যে দিয়ে তিনি তাঁর সন্টির লীলারস আসবাদ করচেন। যে সমাজদার, যে রসিক শিলপীমনের অধিকারী সে ধন্য—কারণ ভগবান তার চোখ দিয়ে, মন দিয়ে সন্টির সৌন্দয্য উপভোগ করেন। সতরাং সমজদারের চোখ ভগবানের চোখ, সমজদার রসিকের মন ভগবানের মন-যা সন্টিমখী হোলে একটা গোটা বিশব সন্টি করে ফেলতে পারে চক্ষের পলকে। কি চমৎকার রাঙা ফালে-ভিত্তি শিমল গাছটার শোভা নদীর ধারে ফণি চক্কত্তির জমিতে! দােপরে নীল আকাশের তলায় রোজ রাঙা ফলগলির দিকে চেয়ে দেখি স্নান করতে যাওয়ার সময়ে। চোখ ফেরাতে পারিনে। কাল আবার দটো প্রজাপতি উড়ে উড়ে বসচে। অত উচ্চ গাছটার ফলে ফলে। প্রজাপতি--- যার জন্ম শায়োপোকা থেকে। শয়োপোকা জীবন পরিত্যাগ করে প্রজাপতি রােপ পরিগ্রহ করেচে, নীল আকাশের তলায় সৌন্দৰ্য্যলোকে বিচরণের অবাধ অধিকার লাভ করেচে। ঐ রাঙা ফলে ভরা শিমল গাছ, ঐ নীল আকাশ, ঐ উত্ডীয়মান রঙীন প্রজাপতি ও সব যেন একটা বড় দর্শনের গ্রন্থ-শাধ যে ভাষায় ঐ গ্রন্থ লেখা তা সবাই পড়তে পারে না ; বািবতে পারে না। গভীর দর্শন-তত্ত্ব ও বইয়ে লেখা রয়েচে-লেখা রয়েচে আত্মার অমরত্বের গোপন বাণী, লেখা রয়েচে তার কামচার শক্তির অলেখা ইতিহাস। যে ঐ ভাষা বঝতে পারে। সে জানে । কাল দাপরে ছিরেপকুরের ওপরের রাস্তা দিয়ে শাঁখারিপুকুরের মধ্যে 帘 পানানের পন্ধেব খানিকটা বসলাম, তারপর বাঁশবনের ছায়ায় ঝরা-বাঁশপাতার পথ দিয়ে V, Գ