পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পকুরের একস্থানে এসে দাঁড়ালম, সেখানে ঘোটফলের একেবারে নিবিড় ভিড়f তেতো সবাস ছড়াচে দাপরের বাতাসে। ওখানে দাঁড়িয়ে মাঠের দিকে চাইতেই সেই উত্তর মাঠের রাঙা ফালে-ভিত্তি বড় শিমল গাছটা চোখে পড়লো। আমি সৌন্দর্য্যে যেন কেমন অভিভূত হয়ে পড়লাম, আর নাবতে পারিনে, অন্য দিকে চোখ ফেরাতে । পারিনে। সঙ্গে সঙ্গে একটা অপব্ব আধ্যাত্মিক অনভূতি হোেল—সে অনভূতি এত পল্ট ও প্রত্যক্ষ যে, তার কথা আমি কাল সারাদিন ভুলিনি। এবং সেকথা। এখানে লিখেও রাখলাম। এজন্য যে এই সব দিল্লভ অনভূতিরাজি যখন অস্পষ্ট হয়ে যাবে, ভূখণ্ডই কািট লাইন পড়লে কালকার অনভূতির বাণী আমার মনে প্রত্যক্ষ ও সপষ্ট হয়ে অনভূতির প্রথম কথা হোল-মনের মধ্যে কে যেন বলে উঠলো-অভীঃ, ভয় কিসের ভয় নেই ? কোনো কিছরই না। “ন মতু্য ন শঙ্কা” ভগবান যাগযােগান্তরে, কলপি থেকে কলপান্তরে আমার এবং তোমার হাত ধরে চলেচেন, আনন্দ ও প্রেমের স্নিগ্ধ ধারার মধ্যে দিয়ে। সকল জন্ম-মরণ পার করে তিনি নিয়ে চলেছেন। জরা নেই, মাতু্য নেই। এমন কত বসন্ত দিবপ্রহর কত ঘোটফােল সবাস বিতরণ করবে, অনাগত জীবনদিনে কত গ্রামে-কত মাতা-পিতার স্নেহ আদর পরিবেশিত হবে, কত ভবিষ্যৎ রাত্রির জ্যোৎস্নায় উত্তজবল হবে সেই সমধর আয়কালগলি, কত কোকিল। ডাকবে, কত রক্তশিমল-ফল ফটবে। জীবন ও জন্ম দিদিনের, ভগবান সখা ও সাথী অনন্ত কালের। জীবের ভয় কি ? অবিনশবির তুমি, অবিনশবির আমি—আমরা ভাগ কাল দাপরে চিল-ওড়া নীল আকাশ থেকে এই আনন্দের বাণী নিঃশব্দে নেমে এল সেই ঘোটফলের বনের মধ্যে, ভগবানের নীরব আশীৰ্ব্ববাদের মত। মন অমতে পণ্য হয়ে গেল। শিরায় শিরায় সে কি জীবনস্রোত ! কি উচ্ছল। রস ও আনন্দের প্রবাহ। কথাটা লিখেই রাখলাম, যদি ভুলে যাই। অন্য কেউ যদি এর পরে পড়ে, আশা করি। সে এই নৈঃশব্দের বাণীর গভীরতা বঝতে পারবে, তারও জীবনে এই বাণী দেবে অমতের সন্ধান। জয়যন্ত হোক আমম কুল ও ঘেটাফল সবাসিত এই কাননের শান্ত দিবপ্রহরটি। সকালে শাঁখারিপাকুরের ধারে বাঁশবনে ঝরা পাতার ওপর বসে ছিলাম। বাঁশ বনের নিচে ছায়ায় ঘেটফল ফটেচে, আমম কুলের সবাসে বাতাস মন্দির, এখানে ওখানে মাঠে শিমল। ফলের কি শোভা ! চপ করে বসে। নলে নাপিতের আম বাগানের পাপভারনত শাখা-প্ৰশাখাগলির দিকে চেয়ে রইলাম। কোকিল ডাকচে. উষ্ণ মাটির গন্ধ বেরচ্চে, শকিনো বাঁশপাতা হাওয়ায় ঘরে ঘরে পড়চে, যেমন পড়তো আমার বাল্যকালে। ঘোটফলের তেতো সবাসে মনের মধ্যে আমার কেমন একটা আনন্দ আনে। ত্ৰিনয়নী পিসিমার সঙ্গে খেলাঘরের মধর বসন্ত-মধ্যাহগিলির কথা মনে হয়ত্ৰিশ বৎসর আগেকার সেই অতীত ফালগন দিনের বাৰ্ত্তা এই ঘোটফলের সবাসে খানিকটা সািপম্পট খানিকটা অস্পষ্টভাবে ফিরে আসে, আমি বাঁশগাছে হেলান দিয়ে বসে অবাক ভাবে দরে রোদ-ভরা মাঠের দিকে চেয়ে থাকি। দাপরে বসে ‘অশনি সংকেত’ উপন্যাসের একটা অধ্যায় লিখি। কল্যাণী গিয়েচ ও-পাড়ার পাঁচী যাগিনীর কালীমার মন্দিরে। সঙ্গে গিয়েচে বাড়ী পিসিমা ও \9ህዖ