পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মান। কাল পাঁচী এসে কতক্ষণ গলপগজব করলে। আমি এর কয়েকদিন আগে দোলের দিন, রেডিও বক্তৃতা দিতে কলকাতা গিয়েছিলাম। সেখানে সনেীতিবাব, মিঃ সিং প্রভৃতির সঙ্গে দেখাও হয়েছিল। কাল জগো ও ফচার সঙ্গে বেলেডাঙায় একটা বাবলার ডাল আনতে গিয়েছিলাম। ঘোষেদের বাড়ীর পিছনে কি অপব্ব ঘোঁটফলের সমাবেশ ও কি ওদের সম্মিলিত সগন্ধ। এই ঘোটফােল কেন যে আমাকে মাতিয়ে দেয়, তা কি করে বলবো। অমন ঘোটফলের সবাস আমি এ বছর অন্ততঃ আর কোথাও দেখিনি। কোথায় লাগে সিনেমা থিয়েটার দেখার আনন্দ ! ভগবানের কথা কেন যে এত মনে হয়! আইনন্দির নাতি এসে আমাদের সঙ্গে আলাপ করলে, সেই ছোকরা, যে স্কুলের আমার ছাত্র ছিল, সম্প্রতি গাের ট্রেনিং পাশ করেচে। বড় চমৎকার লাগলো। আজ ঐ ঘোটফলের শোভা। দঃখের বিষয় কেউ এ সব দেখতে 5H(त का । আজ অপরাহ্রে ছিরেপকুরের ওপারে আমবাগানের তলায় ঘেটােফলের ঘন বনের মধ্যে কতক্ষণ বসে রইলাম। এমন ফালগন দিনে এমন ঘোটফলের সমারোহের মাঝখানে জীবন কোনদিন কাটাইনি। চিরকালই বিদেশে কাটিয়ে এসেচি। হয় ভাগলপরে নয় কলকাতায়, কিংবা মানভূমে, ঘাটশিলায়, ঝাড়গ্রামে। আজ বসে আছি, ঘোটফলের বনের মধ্যে, ফলের ঘন সবাসের মধ্যে। ফলে ভৰ্ত্তি ঘোঁটবন আমার চারপাশে ঘিরে, লতাপাতার সিগন্ধ, সামনে গাছে তিত্তিরাজের আধ-ফাটা ফলের থোলো ঝলচে, কোকিল ডাকচে। ধন্য হােক ভগবানের নাম। ধন্য হােক সেই মহাশিল্পীর শিলপসন্টি। ক'দিন ধরে গণি ও সয়ারামের মোকদ্দমার বিচার করাচি পল্লীমঙ্গল সমিতির অধিবেশনে। কাল রাত্রেও চড়কতলায় অধিবেশন হয়ে গেল। এ গ্রামের ঝগড়াবিবাদ মিটবে না। যত চেন্টা করি বিবাদ থামাতে, তত আরো বেড়ে যায়। কাল বিকেলে কুঠীর বাঁধানো গাঁথনিতে কতক্ষণ বসে রইলাম।---সব শকিনো লতা, পাতা, কাঠ, ডাল, তুতিফল ইত্যাদির গন্ধ বেরোয় এ সময়। ভারি আরামের গন্ধটা। এ পারের মাঠে কতক্ষণ বসে একটা মাত্তি কল্পনা করবার চেন্টা করলাম নিজানে। সমিতির অধিবেশনের পক্বে গিরিনাদার বাড়ী এসে দেবপ্রয়াগের কথা হয়। সে শােধ খাবার জিনিসের গলপ। খোয়ার ল্যান্ড বানিয়ে কি ভাবে উনি পান্ডাদের খাইয়েছিলেন-সে গলপা। উনি বল্লেন—আবার চলো তুমি আমি বেরই। আমি হবো স্বামীজী, তুমি প্রধান শিষ্য। ইন্দর বাড়ীতে ইন্দ সবৰ্ণ পরের দাস-বাবার গলপ করলে। দাসবােব বলতো—আর কি খাই আজকাল ? একটি রাই মাছের মড়ো ও গাওয়া ঘি রোজ খাদ্য ছিল— ইত্যাদি। চড়কতলায় খাব মিটিং। মসরি ডালের ক্ষেতে কতকটা মসরি နို့ ို তাই নিয়ে ঘোর তক। সয়ারাম বলে-আড়াই মন, মসরি হবে। ঘোর গভীর রাত্রে খাব ঝড়বটি। কল্যাণী বলচে, ওগো, জানালা বন্ধ করো, ভেঙে যাবে যে ! ঘামের ঘোরে ভয়ে বলচে । কাল খাব ঝড়বশিষ্ট বিকেলে। রাধাবল্লাভের জামাই কেল্টর রাড়ী সন্ধ্যার পরে