পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পোতা, হরি রায়ের পাঠশালা-সব দেখলাম। দেখে ভদ্রলোক খাব খশি। তারপর ফণিকাকার বাড়ী এসে দেখি চড়কের ‘শিয়াল খাটা হচ্চে ! বাল্যকালে আমার মনে কি উন্মাদনার সন্টি করতো। এই “শয়াল খাটা’। রামনবমী থেকে শার হোত, সেটা যেন একটা ফাঁকতাল্লা, তারপর চড়ক তার আনষঙ্গিক কাঁটাভাঙা, “শয়াল খােটা” নীলপ জো, মেলা, গোষ্ঠবিহার, সং—পরে সকলের শেষে যাত্রা বারোয়ারী। এ আনন্দের তুলনা ছিল ? আজও সেই “শয়াল খাটচে’ সন্ন্যাসীর দল, গ্রামের ছেলেমেয়ে সেই ভাবে জড় হয়েচে-কিন্তু আমার মধ্যে সে আনন্দ আজ নেই। মীনা, কেতো-সবাই দেখচে বসে দেখলাম। চড়কগাছ হবে বলে একটা কি গাছও কাটা হয়েচে চড়কতলার মাঠে। বেলা পড়ে গিয়েচে। ওখান থেকে বেরিয়ে গাঙের ধার দিয়ে কুঠীর কাছে এলাম। ভাঙা কুঠী দেখালােম কাপ্তেন চৌধরিীকে, যেমন বাল্যকালে আমাদের গ্রামে যে কেউ আসক, তাকে কুঠী দেখাবোই। রামপদকে দেখিয়েছিলাম, বামনদাস মািখয্যেকে দেখিয়েছিলাম। আজও দেখাচ্চি ১৩১০ সাল ১৩১১ সালের পরেও। কুঠী হয়ে গেলাম মোল্লাহাটি-বেলেডাঙা, নতিডাঙার পথ দিয়ে। অনেকদিন-প্ৰায় ৫ ৬ বছর মোল্লাহাটি আসিনি। ডাকবাংলোটাতে গিয়ে বসলাম, মেমসাহেবের গোর দেখলাম—সাহেবদের নীলকুঠিীর ধবংসস্তাপের ওপর প্রায়ন্ধিকার সন্ধ্যায় বেড়িয়ে বেড়ালম—কোথায় আজ সেই লালমরা, ফালমান সাহেবের দল, কোথায় তাদের বলদীপিতা, গবিতা মেমের দল। মহাকাল অন্ধকার আকাশে বিষাণ বাজিয়ে সব অবসান করে দিয়েচে । সন্ধ্যায় ফিরে এলাম। মালপাড়ার কাছে হরিপদদার সঙ্গে দেখা। এসে রাত্রে ७ादाद उा59ा । কাল সামটাতে নিমন্ত্রণ খেতে গিয়েছিলাম সতীনাথ মিত্রদের বাড়ী। প্রায় একমাস লিখিনি এ খাতায়। এর মধ্যে আমার সন্ত্রী একটি মত কন্যাসন্তান প্রসব করলে, তার শরীরও অসস্থি হয়ে পড়লো। এই সব কারণে লেখা হয়নি। অনেকদিন কাল সামটায় যাবার পথে উলসী গেলাম। কাপ্তেন চৌধরিীর গাড়ীতেই গেলাম। যে উলসীতে মধকানের বাড়ী, সেই উলসী। জ্যৈষ্ঠ মাসের প্রভাতী বায় বাংলার পল্লী অঞ্চলের নানা পাপ-সবাসে সরোভিত। বিলপ্ৰপশুপ, তুতি গাছের ছোট ছোট ফল। পথের দাধারে ফলে ভরা সৌদালি গাছ যেন নিয়ে পড়চে। কতকাল আগে মধকান মারা গিয়েচেন, আজ এতকাল পরে তাঁর জঙ্গলে-ভরা ভিটে দেখতে প্রায় একশ বছর পরে আমরা এসেচি। আমরা পল্লীকবির ভিটেতে দাঁড়িয়ে আছি, বৌ-কথা-কও পাপিয়ার ডাকের মধ্যে —একটি বাদ্ধা সত্ৰীলোক জল নিয়ে যাচ্চে। সে মধকানের বংশের মেয়ে। তার মাখে আমরা মধকানের গান শািনতে চাইলাম। সে তার বাড়ীতে নিয়ে গেল আমাদের। আমরা বল্লম-মধকানের কোনো খাতা আছে। ঘরে ? সে বল্লো-হ্যা। নিয়ে এল দাখানা খাতা। ১২৭৪ সালে মধকান মারা গিয়েছেন। সেই সময়ের খাতা। তিনি মদ খেয়ে পড়ে থাকতেন—সেই সময় মািখ দিয়ে যা বলে যেতেন--মাহরীরা লিখে নিত। একটি বদ্ধ মধ্যসাদনের একটি গান গাইলেন। ওখান থেকে বেলা সাড়ে বারোটার সময় চলে এলম সামটাতে। রাধানাথ দা ব্রজ এরা ছিল। ডাকবাংলোয় মোটর পাঠিয়েছিল আমার জন্যে। দটি নিদ্রিত সন্দির মখের ছবি আমাকে সম্পৰ্ণে অন্য এক ছবি মনে করিয়ে দিলে। GS,