পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ওদের বাড়ীর নীচে কচারিপানায় বোজানো ব্যাতনা বা বেত্রবতী নদী বয়ে গিয়েচে। এ নদী এখন একেবারে মজা। একসময়ে নাকি সন্টীমার চলতো। বিকেলে নাভারণ ডাকবাংলোতে ফিরে হাট দেখতে গেলাম বিজয়কে নিয়ে। বেত্ৰবতী নদীর পলটার ওপর বসে বসে ভগবান সম্পবন্ধে কেমন এক অদ্ভুত অনভূতি হোল। সেই নিদ্রিত দটি সন্দর মাখের ছবি। কদিন অতি ভীষণ গরম গিয়েচে। কাল যখন রাত্রে মন্মথ দার বাড়ীর আড্ডা থেকে ফিরি, তখন হঠাৎ হাওয়া বন্ধ হয়ে যে কি ভয়ঙ্কর গােমট দেখা দিল। আমার মনে হোল এ গােমটে রাত্রে মশারির মধ্যে কেমন করে শোবো। কিন্তু যেমন বাড়ী এসেছি—আমনি আকাশে মেঘ জমে বেশ এক পশলা বান্টি হোল। বিদ্যুৎ চমকাতে লাগলো। ভেজা মাটির সোঁদা গন্ধ জোলো বাতাসে। কল্যাণী বল্লে-বাদলা হবে। আমি বল্লাম—তা হোলে তো বচি। কিন্তু আসলে বাদলা হোল না। আধ-ঘণ্টাটাক বলিট হয়েই থেমে গেল। সকাল তখনও ভাল করে হয়নি, ভাইজাগ প্যাসেঞ্জার এসে ভুবনেশবরে দাঁড়ালো। আমি অন্ধকারের মধ্যে নেমে গিয়ে গাড়োয়ানদের সঙ্গে দরদস্তুর চন্তি করে মহাদেববাবকে নিয়ে গিয়ে গাড়ীতে তুললাম। অন্ধকার মাঠের মধ্যে দিয়ে গাড়ী চলচে, পথের দন্ধারে নক্সভ মিকার জঙ্গল। একটা পরে ফাসা হোল, গাড়োয়ান বল্লে--এই নালােটা ছাড়িয়ে এক মাইল গেলেই উদয়গিরি খন্ডগিরি। একটা পরেই সাদা। জৈন মন্দিরটি চোখে পড়লো সামনের পাহাড়টির ওপরে। গরীর গাড়ীও গিয়ে দাঁড়ালো পাহাড়ের তলায়। ঘড়িতে দেখলাম ভোর সাড়ে পাঁচটা। সন্দর পরিবেশটি। সামনে বনাবতি পাহাড়, মাটির রং লাল, বড় বড় প্রস্তর যেন মাকড়া পাথরের চত্বর। পথের ধারে একটি জৈন ধৰ্ম্মমশালা। নিচে থেকেই দেখলাম পাহাড়ের গায়ে কাটা সর, সর, থামওয়ালা দর-দালান মত-অনেকদিন আগে নিৰ্ম্মল বসার তোলা ফটাে-এ্যালবামে উদয়গিরির এই সব গাঁহার ছবি যেমন দেখেছিলাম। কিন্তু পাহাড়ের ওপর গিয়ে চারিদিকে চেয়েই মনে হোল এ পাহাড় দটির সৌন্দয্য সম্পবন্ধে আমাকে কেউ কোনো কথা বলেনি। এর আগে। পাহাড়ের ওপরটা সমতল পাষাণ বেদিকার মত। বনে বনে পাখী ডাকচে, বন্য যথিকা ফটে সবাস বিতরণ করাচে, মেঘমোদর আকাশ, দরপ্রসারী প্রান্তর, দরে দরে ছোট বড় পাহাড়। কত মনিঋষির তপস্যাপতি মনোরম স্থানটি। বাস্ত্ৰগম্মফাটি বড় চমৎকার, ঠিক একটি বাঘের মািখ খদে বরি করেচে। আসতে পাহাড় কেটে। আমরা অনেকক্ষণ একটা পাথরের চাতালে বসে তারপর নেমে এলাম নীচে। একটা বন্ধা বসে আছে একটা বাড়ীতে, ধৰ্ম্মশালার পাশে, সে বল্লে, আমি আচার, মাড়ি বিক্রি করি। বল্লাম-কুলের আচার আছে ? -NTC তারপর যে আচার আনলে তা নন মাখানো শকিনো কুল-তাকে আচার বলা চলে না। নিলাম না। সে কুলের আচার। খন্ডগিরিতে উঠলাম তারপরে-- সেখানে নামবার পথে বনের দশ্য বেশ উপভোগ্য। ডাকবাংলোর বারান্দায় খেতে বসেচি, এমন সময় এল ঝড়বভিটি। বাতাস ঠান্ডা হয়ে গেল খােব। জৈন ধৰ্ম্মমশালায় চা বিক্রি হয় জানতাম না-সেখানে কয়েকটি লোককে চা খেতে দেখে গিয়ে বসলাম-চা-ও পাওয়া গেল । আবার ভুবনেশবার রওনা হলাম গরর গাড়ীতে। পথের ধারে শােধই নক্সভৗমিকার (RS