পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জানালায় ঢেউ-সঙ্কুল নীল সমদ্র, ডানদিকের জানােলা দিয়ে চোখে পড়ে জগন্নাথ দেবের বিশাল মন্দিরের চড়া-পরীর দই বিরাট বস্তু। ‘কাকে ফেলে কাকে রাখি কেহ নাহে উনা।” বিকেলে হিরন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়, ওয়াজেদ আলি ও অমিয় চক্ৰবত্তীর সঙ্গে দেখা করে সমদ্রতীরে অনেকক্ষণ বসে বসে হরিদা ও বীরেনবাবর সঙ্গে চীনাবাদাম খেতে খেতে জ্যোৎস্নালোকে গলপ করি। ওখান থেকে উঠে ধৰ্ম্মমশালায় এসে দেখি দেশ” সম্পাদক বণ্ডিকম। সেন ধৰ্ম্মম বিষয়ে বক্তৃতা করবেন। হরিদা কে নিয়ে এসে বসালাম সভায়। অনেক রাত পৰ্যন্ত জ্যোৎস্নালোকের সমদ্রের শোভা দেখি ছাদ থেকে। জগদ্বন্ধ আশ্রমের স্বামীজী পরিমল দাস ও আর একটি ছাত্র এসে গলপ করলেন। স্বামীজী একখানা বই দিলেন পড়তে—প্ৰভু জগদ্বন্ধীর জীবনী। পরীতে একটা সবিধে, সব সময়েই ভগবানের কথা বলবার লোক মেলে। অনেক রাত হয়েচে, ঘােম আসে না চোখে। গরম নেই, হ হ সমদ্রের হাওয়া, শেষ রাত্রে বেশ শীত ধরিয়ে দিলে। সকালে উঠে। হরিদাস মঠে গেলাম। মলয়াবাস বলে একটা বাড়ীতে হরিদার সঙ্গে বসে চা খাই। প্ৰসাদ আসে না তখনো, সবাই খোঁজ নেয়। কেন প্ৰসাদ এল না। বেনারস হিন্দ বিশববিদ্যালয়ের জনৈক অধ্যাপক বেশি রকম খবর করলেন। ভোগ কিনে খেলািম আনন্দবাজার থেকে। পরীর বাসনের দোকান থেকে একটা ঘটি কিনে পাইকপাড়া রাজবাড়ীতে সভা করি। হিরন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় ও অমিয় চক্ৰবত্তীর্ণ উপস্থিত ছিলেন। চমৎকার জ্যোৎস্না ছিল। সখময়বাবার বাড়ী চা খেতে গিয়ে নিরাশ হলাম। সেই সময় এল ঝড়বটি। শেষরাত্রে ফসফরাসের দীপ্তিাবিশিষ্ট আলোকোৎক্ষেপী ঢেউ যেন জবলচে অন্ধকারে। আমরা বিছানা ঘাড়ে করে সেন্টশনে, এলাম। ভোরবেলা ট্ৰেনে ছাড়লো। সারাদিন ট্রেনে, মাঝে মাঝে ভিড় হয়, মাঝে মাঝে ভিড় চলে যায়। কটক সেন্টশনে কতকগালি রাজবন্দী নেমে গেলেন, এরা বহরমপর জেল থেকে মাক্তি পেয়ে আসচেন। একজনের নাম কৃষ্ণচন্দ্র ঘোষ, এরা না পরষ হোল উড়িষ্যায় বাস করছেন, পর্বে বাংলা দেশে বাড়ী ছিল। ভদ্রক সেন্টশনে সনান করলাম কলের জলে, তখন বেলা সাড়ে তিনটা। ধানমন্ডল সেন্টশন ছাড়িয়ে কেবল পাহাড়, সামনে ও দারে। মাটির রং লাল, অনেক মনসাগাছ জগুগলে, ঝাটিজগুগলের বড় শোভা। যাজপর রোডের কাছে এসে আমার মনে হোল এবার চক্ৰধরপরের সমান্তরাল রেখায় এসে পৌঁছেচি-তখনি একটা লোক বল্লে—এখান থেকে চাইবাসা চক্ৰধরপর রোড আছে-—এই দেখােন সেই রাস্তা। একটি পরে বৈতরণী নদী পার হলাম, সন্ধ্যার কিছ আগে সতবর্ণরেখাও পার হওয়া গেল। এই শেয বড় নদী এ লাইনে। আগে সতবর্ণরেখা, তারপর বৈতরণী, তারপরে ব্রাহ্মণী, তারপরে মহানদী, তারপরে কার্টজড়ি। আর কোন নদী নেই এদিকে। আর যা আছে সে সব অনেক দারে—যেমন গোদাবরী রাজমাহেন্দুিতে। খড়গপর সেন্টশনে ট্রেন এল রাত এগারোটা। মেচেদা স্টেশনে এল বহিস্ট। ভোরবেলা আবার ব্যষ্টি এল সাঁৎরাগাছি সেন্টশনে। ননীর সঙ্গে দেখা করবো বলেই এখানে anta Girl l পরী থেকে এলাম শক্রবার, গেলাম গোপালনগরে হাজারি প্রামাণিকের ভ্ৰাতুলপত্রের বিবাহের নিমন্ত্রণে। শশীর মহারী ও আমি একসঙ্গে বসলাম বাড়ীর ভেতরে। জিতেন দফাদার বল্লে-কি রকম, পরীর লোক এখানে কেন ? এখানে 48