পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উঠচে, কেন ওটা মারবো ? ) গিয়ে দাঁড়াই। ওপারে পাটকিলে ও খাঁটি সিদরে রঙের মেঘের ছটা ঠিক সমযকিরণের ছটার মত অর্ধেক আকাশ জড়ে বিরাজ করচে। যেন সেই অনাদ্যন্ত বিরাট পরিষ। যেমনি ঐ ক্ষদ্র পল্পিত লতার মধ্যে প্রাণরপী, তেমনি আবার ধারণাতীত বিরাটত্বের, বিশালত্বের মধ্যেও সমভাবে বিদ্যমান। তেতুলি-তলার ঘাটে নদীর দিকের ঝোপটাতে সেই লতাটাতে সাদা সাদা ফল দলচে, মটরলতায় ফলের থোলো ঝালচে-শ্ৰীঅরবিন্দের কথায় ‘সচ্চিদানন্দ যেমন বলমীকস্তাপে তেমনি সৰ্যমন্ডলে"। ‘সােয্যমন্ডলে কথাটা তিনি বলেন নি, বলেচেন ‘in the system of Suns” অর্থাৎ বহৎ বিরাট সয্যাকার নক্ষত্রসমােহ-দ্বারা গ্রথিত বিশোব। মাক্তি! মাক্তি! মনের মন্তি! আত্মার মাত্তি। এই সন্ধ্যায় সীমাহীন আকাশের দিগন্তলীন অভ্র-বাহন সে দেবতার ছবি মনে আনে, তিনি আর তাঁর এই শ্যামল বর্ষপটি বনকুঞ্জ সবাসিত লতাপাপ মন্তি দিতে সমর্থ। কিন্তু মন্তি নিচ্চে কে? সবাই তুচ্ছ জিনিস নিয়ে ব্যস্ত। হে বন্ধ জীব, সন্ধ্যার আকাশতলে দাঁড়িয়ে সেই পরিপািণ, অবাধ সেই মন্ডির বাণী শ্রবণ করা। একমহত্তে বদ্ধতা ছটে যাবে, (অর্থাৎ দরে যাবে) অমরত্ব নেমে আসবে প্ৰাণে মনে। কাল রাত্রের ভীষণ গােমট গরমের পরে আজ নদীতে নামলিম সনান করতে। আমনি ওপারের চরের দিকে চেয়ে দেখি নবনীল নীরদপঞ্জী দিগন্তের নিচে থেকে ঠেলে উঠে ঝড়ের বেগে উড়ে আসচে এপারের দিকে, ভগবানের সিনপদ্ধ করােণর মতো। কেউ কি দেখেচে, এমন কাজল কালো মেঘের সজল অভিযান, ঘন মেঘমালার এলোমেলো আলথালা হয়ে উড়ে আসার এ অপব্ব দশ্য ? আমার মনে পড়লো ভাগলপরের আজমাবাদ কাছারিতে এই ভাদ্র মাসেই আমি একবার এ দশো দেখেছিলাম, সেও এই রকম সকালবেলা। বেনোয়ারী মন্ডল পটোয়ারিকে ডেকে তাড়াতাড়ি দেখালাম সে দশ্য। আর কাকে দেখাই ? সেখানে আর কেউ ছিল না। বেনোয়ারী মন্ডলকে প্রকৃতি-রসিক বলে আমি ডাকিনি, কাউকে ডেকে ভালো জিনিসের ভাগ দেবো বলেই ডেকেছিলাম, মনে আছে বেনোয়ারী উড়ন্ত মেঘপঞ্জের দিকে খানিকটা চেয়ে থেকে আমার দিকে তাকিয়ে দাঁত বের করে বল্লে—হ্যা, বাবজি, আচ্ছা হ্যায়। এইমাত্র সংক্ষিপ্ত comment করে সে এই বাতুল বাংগালী বাবর পাশ কাটিয়ে কাছারি ঘরে খতিয়ান লিখতে ঢািকলো। আজ কেন ওই মেঘপঞ্জের দিকে চেয়ে আমার চোখে জল এল তা কে বলবো ? ভগবানের কথা মনে করেই চোখে জল এল কি ? তাঁর অসীম দয়ার কথা সন্মরণ করেই কি ? কিন্তু এ সম্পপণ্য অকারণ। আমি কি জানি নে এমন খর, উষর মরভূমির দেশের কথা যেখানে মাসের পর মাস কেটে যায় ১২০০ ১২৫,০০০ ডিগ্রী উত্তাপের মধ্যে, যেখানে এক বিন্দ বারিপাতের সদর সম্পভাবনাও থাকে না। তব ভগবানের দান, ভগবানের দান। সব্ব অবস্থায়, সব্ব দেশে তাঁর অসীম করণার দানকে যেন মাথা পেতে নিতে পারি। প্রাকৃতিক কারণে মেঘ সঞ্চিত হয়েচে আকাশে, উড়ে আসচে। উদ্ধস্তরের বায়স্রোতে-এর মধ্যে ভগবানের দান’ কি আবার রে। বাপ ? যতো সব সেণ্টিমেন্টাল ন্যাকামি। হে অনন্ত, হে অসীম, হে দয়াল তোমার বহ দত, বিশেবর সব দেশে। কত চর CS