পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ps পথের ধারে গাছের তলায় তলায় কত লোক আগােন জোৰলেচে, রান্না করচে। এরা সবাই জেরাইকেলা কিংবা বিসবা থেকে কাজ খাঁজতে এসেচে। কারণ এই জগুগলের মধ্যে এই গ্রামেই দটি কাঠ ব্যবসায়ীদের আড়া আছে। কাঠ কেটে ও চেয় করে ২৫ ॥২৬ মাইল দরবতী রেলস্টেশনে পাঠাবার জন্যে ‘আরাকুসি’ দরকার, কুলি দরকার, গরর গাড়ীর গাড়োয়ান দরকার। তাই এখানে এত লোক আসে। ওরাই আসবার সময় বলেছিল, রোজ রাত্ৰে হাতীতে তাদের বড় জবালাতন করে। হাতীর উপদ্রবে ওরা পালিয়ে ফরেস্ট বাংলোর কম্পাউন্ডে আশ্রয় নিয়েছিল। পরশ 不可1 , গ্রামের লোকে বলেছিল হাতীর উপদ্রবে। গাছের কলা থাকে না, ক্ষেতের কোনো ফসল থাকে না। সব খেয়ে যাবে। উচ্চ মাচা করে তাই ওরা সারা রাত ফসলের ক্ষেতে চৌকি দেয়। শীতকালে এখন ক্ষেতে কোনো ফসল নেই, কাটা হয়ে গিয়েছে, আছে কেবল কুরথি । যেখানেই পাহাড়ের তলায় কুরাথি ক্ষেত, সেখানেই উচ্চ কোনো গাছের ওপরে মাচা বাঁধা। রাত্রে ফসল পাহাড়া দিতে হবে। থলকোবাদ বাংলোর পেছনে যে ছোট পাহাড়ী বন আর উচ্চ রাঙা মাটির ডাঙ্গা তাতে শীতের দিনে একরকম ঘাস হয়েচে, খাব নরম, সর, সর, সাবাই ঘাসের মত। এই ঘাসের মাঝে মাঝে শকিয়ে গিয়ে সোনালি রং ধরেচে। , Y আজ দাপরের পর বাংলো থেকে বার হয়ে এই নিজজন পাহাড়ে উঠে ঘাসের উপর একা বসলাম। আমার পেছনের ঢালতে আসান, অভিজােন, ধ, করম, শাল, পিয়াল, আমলকী গাছের বন। ওদিকে বনের মাথা ছাড়িয়ে আর একটা পাহাড় ঠেলে উঠেচে । কি যে অনভূতি হয়, এখানে বসে চপ করে চোখ বজে থাকলে। শকিনো ঘাসের ভরপর গন্ধ। সোনালি রোদ। কত কি পাখীর ডাক। কান পেতে শোনা যাবে। পাহাড়ের বনে বনে এদিকে ওদিকে কত অজানা পাখীর ডাক। বাংলা দেশের পরিচিত পাখী এরা নয়। আমি এদেশের পাখীর সরে চিনি না। কেবল চিনি বনটিয়া আর ধনেশ পাখীর ডাক। পাহাড় ও বনের পটভূমিতে বনো পাখীদের সঙ্গীত এই নিস্তব্ধ দ্বিপ্রহরে শািন্ধ মনকে বিরাটের দিকে নিয়ে যায়। তাঁর কথাই এখানে বসে ভাবতে ইচ্ছে করে। ধ্যানস্তিমিত নেত্ৰ সেই মহান শিলপীকে একদিন প্রত্যক্ষ করেছিল প্রাচীন ভারতের কোন অরণ্যের অভ্যন্তরে। এমনি নিজজন দােপারে। y একটি পরে মোটরে গেলাম বেড়াতে থালকোবাদ বাংলো থেকে চার মাইল দরে একটা ঝর্ণা দেখতে। সন্ধ্যার দেরি নেই। মোটরের রাস্তা থেকে কিছদরে সেই ঝর্ণাটা। মস্ত বড় শিলাস্তৃত চাতাল সেখানে। কত লক্ষ বৎসরে ধরে এই ক্ষদ্র বর্ণাটি ওপরের নরম রাঙা মাটি কেটে shale ও greisen পাথরের এই চাতাল তৈরি করেছে। কত লক্ষ বৎসর ধরে এই ঝর্ণা চলচে। এখােন দিয়ে। সময়ের বিরাট ব্যাপ্তির কথা ভাবলে আমরা ক্ষদ্র মানষি আমাদের মাথা ঘরে যায়। সামনে সেই ক্ষদ্র ঝর্ণাটি কুলকুল করে পাথরের ওপর দিয়ে বইচে। আমি ঘন বনের মধ্যে মোটা লতা দোলানো একটা বটগাছের তলায় শিলাসনে বসে আর একটা মস্ত বড় মসণ পাথর ঠেস দিয়ে লিখচি। সেই সব পাখীর ডাক। এ জায়গাটা বড় ঘন বনের মধ্যে। একে তো এই সারেন্ডা অরণ্যই নিজজন ও বহ বন্যজন্তু-অধ্যুষিত । তাতে এ জায়গাটা আবার থলিকোবাদ থেকে চার মাইল দরে বনের মধ্যে। বাঘ ও হাতীর ভয় এখানে খাব। মাঝে মাঝে সতক দন্টিতে পেছন দিকে চাইচি, শকিনো পাতার ওপর খসি খসি শব্দ হোলেই। মিঃ সিনহা অাদরে আর একটা গাছের তলায় YS