পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শালা থেকে প্রায় আধ মাইল হোটে দ।--বেলা আমাকে চিড়িয়াখানা য়েতে হত, কে ক-দিন আগরতলা ছিলাম! "কুঞ্জবন প্যালেস একটা অনাচ পাহাড়ের উপর অবস্থিত। পােরনো আমলের তৈরী বলেই দেখতে ঢের ভালো লাগলো, মার্টিন কোম্পানীর তৈরী মহারাজের নতুন প্রাসাদের চেয়ে। কুঞ্জবন প্যালেসের একটা ঘরে অনেক প্রাচীন চিত্র, হাতীর দাঁতের শিল্প, ত্রিপরা রাজবংশের পািব্ব পরিষদের বড় বড় ছবি ইত্যাদি আছে—এসব খাটিনাটি করে দেখতে অনেক সময় গেল। একটি হাতীর দাঁতের ক্ষদ্র নারীমত্তি আমার কি ভালোই লেগেছিল! চারপাঁচ ইণ্ডির বেশি বড় নয়, পরনো হাতীর দাঁত, হলদে হয়ে গিয়েচে-কি কমনীয়তা আর জীবন্ত লাবণ্য মাত্তিটির সারা গায়ে। বার বার চেয়ে দেখতে ইচ্ছে হয়t শনলােম এক সময়ে এখানে হাতীর দাঁতের জিনিসপত্রের ভালো শিলপী ছিল। এই ক্ষদ্র মাত্তিটি কোন অজ্ঞাত কারিগরের শিলপপ্রতিভার অবদান জানিনে, মন কিন্তু তার পায়ে আপনিই শ্রদ্ধা নিবেদন করতে ব্যগ্র হয়ে পড়ে। তাদের ছাদ থেকে সয্যাসত দেখে মনে হল এমন একটা সষ্যাস্ত কতকাল গোটা আকাশটা লাল হয়ে এল, যেন পশ্চিম দিগন্তে লেগেচে আগনি, তারই ছোঁয়াচে রক্তশিখা সারা আকাশে হালকা সাদা মেঘে আগন ধরিয়েচে, প্রকান্ড আগনের গেলাবের মতো সােয্যটা কুঞ্জবন প্রাসাদের পিছনকার ঢেউ খেলানো অনচ্চ শৈলমালা ও সবজি অরণ্যভূমির মধ্যে ডকুবে যাচ্চে। যতদর চোখ যায়, শািন্ধ উচনীচ, পাহাড় আর উপত্যকা, উপত্যকা আর পাহাড় :- ঘনবন্যানীমন্ডিত রাঙা সর পথটি বনের মধ্যে একেবেকে পাহাড়ের ওপর একবারু উঠে একবার নেমে, কতদাের চলে গিয়ে ওদিকের দিগন্তে মিশে অদশ্য হয়েচে। একদিন আমি একা এই পথে অনেকদর গিয়েচি, সেও বিকেলবেলা। কুঞ্জবন প্যালেসের চড়া আর দেখা যায় না, চারিপাশে শােধ বন আর পাহাড়। একজন টিপ্ৰাই লোক তীরন্ধনক হাতে সেপথে আসচে। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম-এদিকে কি দেখবার আছে ? গ্ৰাম্য টিপ্ৰাই জাতির কথা বোঝা ভীষণ শান্ত । সে কি বললে প্রথমটা ভালো বঝতেই পারলাম না, তারপর মনে হল সে বলচেওদিকে আর যাবেন না। সন্ধ্যার সময়। -3RP -বনো হাতীর ভয়, এই সব বনে এই সময় আসে। --তুমি কোথায় থাকো ? —ওদিকে আমাদের গ্রাম আছে। এই পাহাড়ের ওপারে—তীরন্ধনক হাতে কেন ? —তীরন্ধনক না নিয়ে আমরা বেরই না, জঙ্গলের পথে নানা উৎপাত। —আমাকে তোমাদের গ্রামে নিয়ে চল, দেখবো। —এখন আর সময় নেই, সেখান থেকে ফিরতে রাত হয়ে যাবে—তুমি আমায় পৌছে দিও শহরে, বকশিশ দেবো।-- লোকটা রাজি হল না। তার অনেক কাজ আছে, সে যেতে পারবে না। অতিথিশালায় ফিরে দেখি আমার সঙ্গী টেবিলে আলো জোৰলে কি লেখাপড়ার্চ করচেন। এই ভদ্রলোকটিকে আমার কেমন যেন রহস্যময় বলে মনে হত-কি কাজ করে, কি ভাবে, কি ওর জীবন, এসব জানতে আমার খাব আগ্রহ ছিল মনে মনে। কিন্তু . a Ο GS