পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

—দবারভাঙার মহারাজ তাঁর জমিদারি বেড়াতে এসে এই জায়গাটি বড় পছন্দ করেন, শানেচি তিনিই মন্দির করে দিয়েছিলেন। বিগ্রহের দেবোত্তর সম্পত্তি আছে, ওঁদেরই দান। -আয় কত হবে ? —বছরে তিন-চারশো টাকা, তবে ঠিকমতো আদায় হয় না। সব বছর, লোকজনের প্ৰণামী ও মানত ইত্যাদির আয়েও কিছটা ব্যয়নিৰবাহ হয়। আমার জন্য খাবার এল সর, আতপ চালের ভাত, অড়রের ডাল ও কি একটা তরকারি ; এসব দিকে বাংলাদেশের মতো দ-তিন রকম আনাজ মিশিয়ে ব্যঞ্জন রন্ধনের পদ্ধতি প্রচলিত নেই।--আলী তো শােধ আলােরই তরকারি, বেগােন তো শািন্ধ বেগনেরই তরকারি। সে তরকারি বাঙালীর মাখে ভালো লাগে না-কিন্তু ডাল এত চমৎকার রান্না হয় যে বাংলাদেশে কাচিৎ তেমনটি মেলে। মোহান্তজীর মাখে শািনলাম দ্য বেলা প্রায় পঞ্চাশজন অতিথি-অভ্যাগত ও দরিদ্র গ্রাম্যলোক ঠাকুরের প্রসাদ পায়। দটি বন্ধ শিষ্য আছে মোহান্তজীর, তারাই রান্না করে দ্য বেলা। কোনো মেয়ে, তা সে যে-বয়সেরই হোক, আশ্রমে রাখবার নিয়ম নেই। বিহারের নিজজন পল্লীপ্রান্তে পৰ্ব্বব্যুতের এই মন্দির মনে একটি উত্তজবল নবীনতা ও পরম শান্তির সন্টি করে ; এর সােবলপায়োজনমাধ্যায্য মনকে এমন অভিভূত করে যে অনেক বহৎ আয়াস তার ত্ৰিসীমানায় পৌছতে পারে না। সন্ধ্যার সময় যখন আশ্রম থেকে চলে আসি, তখন মোহালতজনী আমার সঙ্গে কথা বলতে বলতে অনেক দীর এলেন। তাঁর বিশেষ আগ্রহ দেখলাম মন্দিরের আয় বাড়োনোর দিকে-অবিশ্যি নিজের স্বাথের জন্যে নয়। গ্রামের অনেক গরিব লোক দৰবোলা এখানে প্ৰসাদ পেয়ে থাকে, আরও কিছ আয় বাড়লে আরও বেশি লোককে খাওয়াতে পারতেন। মোহান্তজী প্রকৃতই অতি সদাশয় ব্যক্তি এবং বালকের মতো সরল। তাঁর ধারনা এ ধরনের একটা সৎকাজের কথায় যে কেউ টাকা দিতে রাজী হবে। শােধ মাখের কথা খসাবার অপেক্ষা মাত্র । তাঁর সরলতা দেখে আমার হাসি পেল। বললাম-মোহান্তজী, আপনি একবার ভাগলপরে আসন না, আপনাকে দ-এক জায়গায় পাঠিয়ে দেবো, আপনি নিজেই বাঝবেন কে কেমন দিচ্চে। চারধারে ফাঁকা মাঠ, মাঝে মাঝে ছোট ছোট ঢিবির ওপর ক্ষদ্র বন, দরে দরে সীসম গাছ-বিহারের সীসম গাছ একদিকে একটি হেলে থাকে—অনেকগলো থাকে এক সারিতে। যাকে শিশ গাছ বলে, সে সম্পণে আলাদা গাছ, যদিচ সৰীসম গাছের কাঠেও বেশ মজবত তত্ত্বা হয় শানেচি। —খব থাকবে, তবে আপনি নিজে না এলে কিছ করতে পারবো না। হঠাৎ আমায় মোহান্তজী বললেন—আসন, আপনার সঙ্গে পাঁড়োজীর আলাপ कब्रिटश प्रिदे। মাঠের মধ্যে এক জায়গায় অনেকগলো চালাঘর দেখা গেল। কাছাকাছি অন্য কোনো বাড়ি নেই। দরে নিকটে অনেকগালি সীসমা গাছের সারি। আমি একটা ইতস্তত করলাম যেতে, কারণ সেন্টশনে গিয়ে আমায় ট্রেন ধরতে হবে। মোহান্তজী আমার কোনো আপত্তি শািনলেন না-পরে অবিশ্যি বকলাম তিনি ህፍ