পাতা:দিবারাত্রির কাব্য - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দিবরাত্রির কাব্য SS8 মালতী খানিকক্ষণ চুপ করে থাকে। ‘হেরম্ব ?” ‘বলুন, শুনছি।” “আচ্ছা, এরকম তো হতে পারে চলে গিয়ে ফিরে আসতে ইচ্ছা! হয়েছে, লজ্জায় আসতে পারছে না ? ক্ষ্যাপা মানুষ বেঁকের মাথায় চলে গিয়ে হয়ত আপশোষ করছে। কেউ গিয়ে ডাকলেই আসবে ?” হেরম্ব এবারও নিৰ্ম্মম হয়ে বলল, “এমনি যদিও বা আসেন, খোজখুজি করে বিরক্ত করলে একেবারেই আসবেন না।” মালতীর কণ্ঠে হেরম্ব কান্নার আভাস পেল । “তোমার মুখে পোকা পাডুক হেরম্ব, পোকা পড়ুক। তুমিই শনি হয়ে এ বাড়ীতে ঢুকেছি। তুমি যেই এলে ওমনি একটা লোক গৃহত্যাগী হল । কই আগে ত যায় নি।” হেরম্ব চুপ করে থাকে। আনন্দ মৃদুস্বরে বলে, ‘ঘুমোও না, মা ।” মালতী তাকে ধমক দিয়ে বলে, “তুই জেগে আছিস বুঝি ? আমাদের পরামর্শ শুনছিস ?” “তোমাদের পরামর্শের চোটেই যে ঘুম আসছে না।” জবাবে স্বাভাবিক কড়া কথার বদলে মালতী হঠাৎ মিনতির সুরে যা বলল শুনে হেরম্বের বিস্ময়ের সীমা রইল না । ‘আনন্দ, আয় না। মা, আমার কাছে এসে একটু শো । আয় ।” হেরম্ব আরও বিস্মিত হল আনন্দের নিষ্ঠুরতায় । ‘রাত দুপুরে পাগলামি না করে ঘুমোও তো।” হেরম্বের অভিজ্ঞতায় মালতী আজ প্রথম ধমক খেয়ে চুপ করে রইল।