পাতা:দিবারাত্রির কাব্য - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৭৯ ৷ দিবারাত্রির কাব্য দুঃখ সৃষ্টি হবার সুযোগও ছিল না। আমরা সমবেদনা দেব কাকে ? কিসের জোরে রোমিও জুলিয়েট আমাদের একফোটা অশ্রু দাবী করবে ? ওরা তো দুঃখ পায় নি। প্রেমের পরিপূর্ণ বিকাশের সময় ওরা দুঃখকে এড়িয়ে চলে গেছে । আমরা ওদের প্রেমের জন্য শোক করি, ওদের জন্য নয়।” ) আনন্দ वव्याळ, ‘প্ৰেম কতদিন বঁাচে ?” হেরম্ব হেসে বলল, “কি করে বলব। আনন্দ ! দিন গুণে বলা যায় না । বে বেশীদিন নয় । এক দিন, এক সপ্তাহ, বড়জোর এক মাস।” শুনে আনন্দ যেন ভীত হয়ে উঠল । “মোটো ?” হেরম্ব আবার হেসে বলল, “মোটে হল ? একমাসের বেশী প্ৰেম, গারো সহ্যু হয় ? মরে যাবে আনন্দ-একমাসের বেশী হৃদয়ে প্ৰেমকে পুষে রাখতে হলে মানুষ মরে যাবে। মানুষ একদিন কি দু’দিন মাতাল হয়ে থাকতে পারে। জলের সঙ্গে মদের যে সম্পর্ক মদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক তাই,-প্ৰেম এত তেজী নেশা ।” আনন্দ হঠাৎ কথা খুজে পেল না। মুখ থেকে সে চুলগুলি পিছনে ঠেলে দিল। ডান হাতের ছোট-আঙ্গুলটির ডগা দাতে কামড়ে ধরে এক পায়ের আঙ্গুল দিয়ে অন্য পায়ের নখ থেকে ধূলো মুছে দিতে লাগল। তার মনে প্ৰবল আঘাত লেগেছে বুঝে হেরম্ব দুঃখ বোধ করল। কিন্তু এ আঘাত না দিয়ে তার উপায় ছিল না । আনন্দের কাছে সত্য গোপন করার ক্ষমতা তার নেই। তাছাড়া, প্রেম চিরকাল বাচে। কোনদিন কোন অবস্থাতে কোন মানুষকেই এ শিক্ষা দিতে নেই ;