পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/১০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

অবস্থায় পড়েছে। কিছুকাল যাবত চুংকিং-এ যে আভ্যন্তরীণ অসুবিধার সৃষ্টি হয়েছে, তার ফলে এ দুর্ব্বলতা বেড়েই গেছে।

 চুংকিং-এর আভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি সম্পর্কে আলোচনা প্রসঙ্গে আমি অক্ষশক্তির অন্তর্ভুক্ত কিংবা নিপ্পনের কোন পরিদর্শক বা মন্তব্যকারীর উল্লেখ করব না—আমি উদ্ধৃত করছি একজন আমেরিকান লেখকের মন্তব্য থেকে। কয়েকদিন আগে ‘চিকাগো ডেইলী নিউজের’ সংবাদদাতা আর্চিবল্ড ষ্ঠীল তারযোগে জানিয়েছিলেন: “সাত বৎসরের যুদ্ধের স্তূপীকৃত বোঝার নীচে ক্লান্ত চুংকিং যুদ্ধের অষ্টম বর্ষে পদার্পণ করতে গিয়ে বুঝেছে, এই বৎসরই হবে তার অস্তিত্বের পক্ষে আশঙ্কাজনক। অর্থনৈতিক ও সামরিক দিক থেকে চুংকিং খুব বিপদে পড়েছে। গত বৎসর চুংকিং-এর পক্ষে দুঃসময় গেছে—বোধ হয় এ যুদ্ধের মধ্যে সবচেয়ে বেশী দুঃসময়। মুদ্রাস্ফীতি চরম আকার ধারণ করেছিল। অবরোধ এবং অন্যান্য কারণে চুংকিং-বাহিনী ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ক্রমশঃ দুর্ব্বল হয়ে পড়ছে।” প্রতিরোধের অবশিষ্ট শক্তি দক্ষিণ-পূর্ব্ব চীনে নিপ্পনের আক্রমণাত্মক অভিযানের ফলে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে—একথার উল্লেখ করে সংবাদদাতা বলেছেন: “জনগণের মনোবৃত্তিতেও যুদ্ধ-ক্লান্তি স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।” এর সঙ্গে তিনি যোগ করেছেন, চুংকিং “ক্লান্ত, বড় ক্লান্ত।”

 চুংকিং-এর সঙ্কটজনক পরিস্থিতির কথা জেনে বিবেচনা করে আমেরিকানরা সর্ব্বপ্রকার কৌশল প্রয়োগ করে চুংকিং-এর মনোবল ধরে রাখার প্রয়াস পাচ্ছে। তারা অবশ্য চুংকিং-এর মার্কিণ-সমর্থক মহলের দ্বারা চুংকিং-চীনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। তারা এ আশাও দেখাচ্ছে, শীঘ্রই বর্ম্মা-রোড উন্মুক্ত হবে এবং সেই পথে ভারতের মারফত চুংকিং-এ প্রচুর পরিমাণ সাহায্য পাঠানো হবে। এই আশ্বাস অনুযায়ী ইঙ্গ-মার্কিণরা উত্তর থেকে দক্ষিণে ব্রহ্মের উপর বিরাট অভিযান আরম্ভ করেছিল। এই অভিযানকে বিজ্ঞপিত করা হয়েছিল ব্রহ্ম-পুনরুদ্ধারের অভিযান

৮৯