পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/১০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

আমি এর মধ্যে বিধাতার অঙ্গুলি-নির্দ্দেশ দেখতে পাচ্ছি—বিশেষ করে যখন ভারতের এই পূর্ব্ব-সীমান্ত-পারে ত্রিশ লক্ষ দেশপ্রেমিক ভারতবাস বাস করে।

 এই ত্রিশ লক্ষ ভারতবাসীকে রাজনৈতিক ও সামরিক দিক থেকে সঙ্ঘবদ্ধ করা হয়েছে। তাদের নিজেদের যে গবর্নমেণ্ট আছে, সেই গবর্নমেণ্ট পৃথিবীর নয়টি শক্তির দ্বারা লৌকিকভাবে স্বীকৃত। পূর্ব্ব-এশিয়ার প্রত্যেকটি ভারতবাসী একতাবদ্ধ। বৃটিশরা ভারতে সর্ব্বদা যে ধর্ম্মগত ও অন্যান্য বিভেদ উস্কিয়ে দেবার চেষ্টা করে, এদের মধ্যে সে বিভেদ নেই। ভারতের মুক্তি সাধন কল্পে সাফল্যের সঙ্গে সংগ্রাম চালানোর জন্যে এরা সামগ্রিক সমরপ্রস্তুতির কার্য্যক্রম পরিপূরণে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এই সামগ্রিক সমর-প্রস্তুতি ধন, জন এবং দ্রব্যাদি সম্পর্কিত। তাদের নিজেদের আধুনিক একটি সেনাবাহিনী আছে— যে বাহিনী গত মার্চ্চ মাস থেকে ভারতের মাটির উপর যুদ্ধরত।

 একমাত্র প্রশ্ন এই, আজাদ-হিন্দ-ফৌজ জাপানের সশস্ত্র বাহিনীর সাহায্যে এবং স্বদেশস্থিত স্বাধীনতাকামী ভারতীয়দের সহায়তায় ভারতে বৃটিশ-শক্তির উচ্ছেদ করতে পারবে কিনা।

 আমার উত্তর—“হাঁ, পারবে।”

 আমি নিজ অভিজ্ঞতা থেকে বাস্তববাদীর মতোই কথা বলছি। আমি ভারতে বৃটিশদের শক্তি জানি। দেশে ভারতীয় জনগণের যে শক্তি আছে, তাও আমি জানি। ইন্দোব্রহ্ম-সীমান্তে এবং ভারতের অভ্যন্তরে মণিপুর ও আসাম অঞ্চলে ইঙ্গ-মার্কিণ সৈন্যদের শক্তি আমি দেখেছি। গত ফেব্রুয়ারী থেকে এই অভিযানে যেসব যুদ্ধবন্দী আমাদের পক্ষে এসেছে তাদের আমি দেখেছি এবং তাদের সঙ্গে কথাও বলেছি। আমাদের যে সব সহকর্ম্মী এবং চর বর্ত্তমানে ভারতের অভ্যন্তরে কাজ করছেন, তাঁদের কাছ থেকেও বিবরণ পেয়েছি। এই সব থেকে

৯১