পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/১৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

তখন যুদ্ধের সুরু থেকে মণিপুরের মহারাজা এমন নীরব আছেন কেন? আমি তার কারণ জানি। মহারাজা এবং তাঁর প্রজাদের সঙ্গে বৃটিশদের কোন সম্পর্ক নেই। সেদিন পর্য্যন্ত মণিপুরের জনগণ এবং নাগা পর্ব্বতের লোকেরা অর্থাৎ কোহিমা অঞ্চলের লোকেরা—বৃটিশের বিরোধিতা করেছে—এমন কি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধও করেছে। সেইজন্যেই তারা আমাদের সৈন্যদলের প্রতি এত বন্ধুভাবাপন্ন, আমাদের তারা সর্ব্বপ্রকারে সাহায্য করছে।

 গত আড়াই বৎসর ধরে দেশবাসী অবিচ্ছিন্ন জাপ-বিরোধী প্রচার শুনেছেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও একটি প্রশ্নের উত্তর আজ পর্য্যন্ত মেলে নি। জাপান ছাড়া সমগ্র পূর্ব্ব-এশিয়ায় এমন কোন শক্তি আছে কি, যে ইঙ্গ-মার্কিণের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারে এবং ভারতীয় জনগণকে তাদের স্বাধীনতা-সংগ্রামে সাহায্য করতে পারে? চীন, রাশিয়া এবং অন্যান্য দেশের সম্পর্কে সহানুভূতির কথা বলা সহজ। কিন্তু আমাদের নিজেদের প্রতিই সর্ব্বাগ্রে সহানুভূতি জানাতে হবে—আমাদের মুক্তির জন্যে সর্ব্বাগ্রে চেষ্টা করতে হবে। নিজেদের আমরা প্রশ্ন করব, বিভিন্ন ভয়ঙ্কর শক্তি সমর্থিত এক শক্তিশালী সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমাদের সাহায্য দেবার মতে পৃথিবীতে আজ কে আছে?” এই সহজ প্রশ্নের জবাবে বুঝতে পারি, জাপান ছাড়া আমাদের স্বাধীনতা-সংগ্রামে বাস্তব সাহায্য করার মতো অন্য কোন শক্তি নেই। ১৯৩০ অব্দের জাপানের কথা বিবেচনা করলে চলবে না। এ জাপান আজকের জাপান, যে মিত্রশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করছে, তাদের শক্তিক্ষয় করছে এবং এইভাবে আমাদের কাজ সহজ করে দিচ্ছে। এ সেই জাপান, যে স্বাধীন ভারতের অস্থায়ী গবর্নমেণ্টকে স্বীকার করেছে এবং ভারত সম্বন্ধে তার সদভিপ্রায়ের বাস্তব প্রমাণ দিয়েছে। আজকের জাপান এবং সমগ্র পূর্ব্ব-এশিয়ায় তার নতুন নীতি দেখে পৃথিবীর এ অঞ্চলের ত্রিশ লক্ষ ভারতবাসী

১২৫