পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

সূচিত হয়েছে, তা নয়। ইতালীর ‘রিসর্জিমেণ্টো’ আন্দোলনে ম্যাট্‌সিনিই প্রথম ইতালীয় জনগণকে আধ্যাত্মিক প্রেরণা দান করেন। তার ফলে বীরযোদ্ধা গ্যারিবল্ডি তাঁর অনুবর্ত্তী হয়ে এক হাজার সশস্ত্র স্বেচ্ছাসেবকের পুরোভাগে থেকে রোম অভিমুখে অভিযান সুরু করেন। আধুনিক কালের আয়ার্ল্যাণ্ডেও সিনফিনদল, ১৯০৬ অব্দে এই দলের উদ্ভাবকালে, আইরিশ জনগণকে একটি কর্ম্মতালিকা প্রদান করেছিল। এই কর্ম্মতালিকার সঙ্গে মহাত্মা গান্ধীর ১৯২০ অব্দের অসহযোগ-আন্দোলনের কর্ম্মপন্থার সাদৃশ্য অত্যন্ত বেশী। সিনফিন দলের উৎপত্তিকাল থেকে দশ বছর পরে, অর্থাৎ ১৯১৬ সালে, প্রথম সশস্ত্র বিপ্লব ঘটে।

 মহাত্মা গান্ধী স্বাধীনতার সরল পথে দৃঢ়ভাবে আমাদের পরিচালনা করেছেন। তিনি ও অন্যান্য নেতৃগণ আজ কারান্তরালে বন্দিজীবন যাপন করছেন। সুতরাং মহাত্মা গান্ধী যে কাজ আরম্ভ করেছিলেন, তা দেশের ভিতর ও বাইরে থেকে তাঁর স্বদেশবাসিদের সম্পন্ন করতে হবে। দেশের ভিতরে যে ভারতীয়েরা আছেন, শেষ-সংগ্রামের জন্য তঁদের যা কিছু দরকার, তা তাঁদের আছে। কেবল একটি জিনিষের তাদের অভাব,—তা হচ্ছে মুক্তি-সেনাদল। এই মুক্তি-সেনাদল ভারতের বাইরে থেকে পাঠাতে হবে, এবং তা কেবল ভারতের বাইরে থেকেই পাঠানো যেতে পারে।

 ১৯২০ অব্দের ডিসেম্বর মাসে নাগপুরে কংগ্রেসের বার্ষিক অধিবেশনে ভারতীয় জাতির কাছে অসহযোগ আন্দোলনের কর্ম্মপন্থা উত্থাপিত করে মহাত্মা গান্ধী বলেছিলেন—‘যদি ভারতের আজ তরবারি থাকত, তা হলে ভারত তরবারি কোষমুক্ত করত।’ এমনিভাবে যুক্তি দেখিয়ে তারপর মহাত্মাজী বলেন যে, সশস্ত্র বিপ্লবের কথা অবান্তর বলেই, দেশবাসীর পক্ষে তার পরিবর্ত্তে অপর উপায় হচ্ছে অসহযোগ অথবা সত্যাগ্রহ। তারপর থেকে সময়ের পরিবর্ত্তন হয়েছে এবং ভারতীয়

১৮