পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

নিযুক্ত করা হয়। ১৯৪৪-এর ২১শে ফেব্রুয়ারী কর্নেল লোকনাথন তাঁর নূতন কর্ম্মভার গ্রহণ করেন।

 ১৯৪৩-এর ডিসেম্বর মাসের প্রথম ভাগে ভারতবর্ষে—বিশেষ করে বৃটিশ-ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশ্যে আমাদের সেনাবাহিনীর অফিসার এবং সৈন্যেরা যাতে বাণী প্রচার করতে পারেন, সেই জন্য ভারতীয় জাতীয় বাহিনী বেতার-কেন্দ্র নামে একটি বিশেষ বেতার-কেন্দ্র গঠিত হয়। ব্রহ্মে আমাদের প্রধান কর্ম্মকেন্দ্র স্থানান্তরিত হবার পর ইন্দো-ব্রহ্ম সীমান্তের কাছে ভারতীয় জাতীয় বাহিনীর একটি দ্বিতীয় বেতার-কেন্দ্র খোলা হয়। সামরিক গবর্নমেণ্ট কর্ত্তৃক পরিচালিত অপর দুইটি বেতার-কেন্দ্র ছাড়াও এ দু’টি বেতার কেন্দ্র তখন থেকেই চালু আছে।

 ১৯৪৩-এর শেষদিকে আমাদের সমর-প্রস্তুতি এতদূর অগ্রসর হয়েছিল যে, আমরা সোনান (সিঙ্গাপুর) থেকে ব্রহ্মে আজাদ-হিন্দ ফৌজের সামরিক গবর্নমেণ্ট এবং ভারতীয় স্বাধীনতা লীগের প্রধান কর্ম্মকেন্দ্র স্থানান্তরিত করার প্রয়োজন অনুভব করি। ১৯৪৪-এর জানুয়ারী মাসে এই স্থানান্তরণ হয়। তখন থেকে আমরা স্বাধীন ব্রহ্ম গবর্নমেণ্টের সদয় সহানুভূতি ও সমর্থন পাচ্ছি এবং তার ফলে আমাদের কাজের যথেষ্ট সুবিধা হয়েছে।

 আমাদের সমরোদ্যোগের গতি বাড়িয়ে বৃটেন-আমেরিকার বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধ ঘোষণাকে কার্য্যকরী করে তোলার জন্য ১৯৪৪-এর জানুয়ারী মাস ব্যয়িত হয়েছিল। এর পর ৪ঠা ফেব্রুয়ারী আরাকান অঞ্চলে আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধের প্রথমারম্ভ। আরাকান অঞ্চলের যুদ্ধকে আজাদ-হিন্দ ফৌজের অগ্নি-শুদ্ধি (baptism of fire) বলা চলে। এই পরীক্ষায় আমাদের সৈন্যরা পূর্ণ বিজয়ী হয়ে এসেছে। আজাদ-হিন্দ ফৌজের সদস্যরা যে চরমতম অসুবিধা এবং কঠিন অবস্থার মধ্যেও বীরের

৩০