পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

মতো যুদ্ধ করবে—এ বিষয়ে সকলেই এখন নিঃসংশয়। আরাকান-যুদ্ধে আমাদের যেসব সৈন্য ও অফিসার বীরত্ব প্রদর্শন করেছেন তাঁদের কয়েক জনকে সামরিক গবর্নমেণ্টের তরফ থেকে সম্মানে বিভূষিত করার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল।

 প্রায় একমাস পরে, সঠিক তারিখ বলতে গেলে ৮ই মার্চ্চ—ইন্দোব্রহ্ম সীমান্তের টীড্ডিম নামক নূতন অঞ্চলে পুনরায় যুদ্ধারম্ভ হয়। এক সপ্তাহ পরে মণিপুর ও আসামের দিকে অভিযান শুরু হল এবং অচিরে কয়েকটি স্থানে আমাদের সৈন্যরা ভারত-সীমান্ত অতিক্রম করল। আজাদ-হিন্দ ফৌজের কয়েকটি দল নিপ্পনের সাম্রাজ্যিক বাহিনীর পাশাপাশি মণিপুর ও আসামে প্রবেশ করে। তারপর থেকে ভারত-সীমান্তের মধ্যে যুদ্ধ চলেছে। কালাদন এবং হাকা অঞ্চলেও আমাদের সৈন্যরা যুদ্ধ করছে। যদিও সম্প্রতি আমাদের অগ্রগতি চমকপ্রদ হয়নি, তবু আমরা ধীর স্থির গতিতে এগিয়ে চলেছি। হতাহত হওয়া যুদ্ধের অবশ্যম্ভাবী ফল; তার সঙ্গে জুটেছে প্রবল বর্ষা ঋতু ও আনুষঙ্গিক ম্যালেরিয়া ও অন্যান্য রোগ এবং অপর বহুপ্রকারের কষ্ট ও অসুবিধা। এ সত্ত্বেও আমাদের সৈন্যরা যুদ্ধে অসামান্য কৃতিত্ব দেখাচ্ছে। অপরিসীম তাদের মনোবল। ভারতের মাটিতে দাঁড়িয়ে যুদ্ধ করছে—এই অনুভূতি তাদের অফুরন্ত প্রেরণা জোগাচ্ছে। গৃহ রণাঙ্গণে যাঁরা কর্মব্যস্ত তাদের মনেও আজ এই একই প্রেরণা।

 ১৯৪৪-এর মার্চ্চ মাসে আমাদের সৈন্যরা ভারত-সীমান্ত অতিক্রম করার পর বিপক্ষদল পশ্চাদপসরণ শুরু করল। তখন এক নূতন সমস্যা দেখা দিল—মুক্ত অঞ্চলের শাসন ও পুনর্গঠনের সমস্যা। সুখের বিষয়, ভারতীয় স্বাধীনতা লীগের পুনর্গঠন বিভাগের প্রচেষ্টায় আমরা পূর্ব্ব থেকেই এর জন্যে প্রস্তুত ছিলাম। গত মার্চ্চে বহু নরনারী নিয়ে অন্য একটি নূতন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হল—তাদের কাজ,

৩১