পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

গোষ্ঠীতে আবার এমন চরমপন্থীও আছেন যাঁরা বৃটেনকে মার্কিণ যুক্তরাষ্ট্রের ৪৯তম ষ্টেট বলে থাকেন।

 আপনি সারাজীবন যে পথের বার্ত্তা প্রচার করে আসছেন, সেই পথে—বিনা নররক্তপাতে যদি ভারতের স্বাধীনতা লাভ সম্ভব হত, তবে স্বদেশে কিংবা বিদেশে এমন কোন ভারতবাসী নেই যে সুখী হত না। কিন্তু বাস্তব অবস্থাকে স্বীকার করে নিয়ে আমরা যদি স্বাধীনতা চাই, তবে আমাদের রক্তস্নানের জন্যে প্রস্তুত হতে হবে—এই আমার দৃঢ় বিশ্বাস।

 ভারতে থেকে যদি নিজে চেষ্টায় এবং উপাদানে সশস্ত্র সংগ্রামের ব্যবস্থা করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হত, তবে সেটাই হত সব চেয়ে শ্রেষ্ঠ পন্থা। কিন্তু মহাত্মাজী, ভারতের অবস্থা আপনি আর সকলের চেয়ে ভাল করেই জানেন। আমার কথা বলতে গেলে, ভারতে বিশ বৎসরের জন-সেবার অভিজ্ঞতার পর আমি এই সিদ্ধান্তে এসেছি যে, বাইরের সাহায্য—বিদেশস্থ ভারতীয়দের সাহায্য এবং কোন একটি বা একাধিক বিদেশী শক্তির সাহায্য ছাড়া ভারতে সশস্ত্র প্রতিরোধ সংগঠন অসম্ভব। বর্ত্তমান যুদ্ধ আরম্ভ হবার পূর্ব্ব পর্য্যন্ত কোন বিদেশী শক্তির সাহায্য—এমনকি বিদেশস্থ ভারতীয়দের সাহায্য পাওয়াও অত্যন্ত দুষ্কর ছিল। কিন্তু বর্ত্তমান যুদ্ধারম্ভ বৃটিশ সাম্রাজ্যের শত্রুদের কাছ থেকে রাজনৈতিক এবং সামরিক এই উভয়বিধ সাহায্য পাবার সম্ভাবনা নিয়ে এসেছিল। তাদের কাছ থেকে সাহায্য প্রত্যাশা করার পূর্ব্বে আমাকে প্রথম জানার চেষ্টা করতে হয়েছিল, ভারতের স্বাধীনতা-দাবীর প্রতি তাদের যথার্থ মনোভাব কি। কয়েক বৎসর ধরে বৃটিশ প্রচারকরা বিশ্ববাসীদের জানাচ্ছিল অক্ষশক্তিগুলি স্বাধীনতার শত্রু এবং কাজে কাজেই ভারতের স্বাধীনতারও শত্রু। সে কথা কি সত্য? আমি নিজেই নিজেকে এ প্রশ্ন করেছিলাম। কাজেই এই সত্যানুসন্ধানের জন্যে এবং আমাদের স্বাধীনতার যুদ্ধে অক্ষশক্তিপুঞ্জ আমাদের সাহায্য ও

৫৭