পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 ভারতের বুক থেকে শেষ ব্রিটিশটিকে না তাড়াতে পারা পর্য্যন্ত জাপানের কাছ থেকে আমাদের কতটা সাহায্যের প্রয়োজন হবে, সেটা নির্ভর করবে আমরা ভারতের মধ্য থেকে কতটা সহযোগিতা পাই না পাই—তার উপর। জাপান নিজে জোর করে আমাদের সাহায্য দিতে চায় না। নিজেদের প্রচেষ্টায় ভারতীয় জনগণ যদি নিজেদের মুক্তি বিধান করতে পারে, তবে জাপান খুসিই হবে। বৃটেন এবং আমেরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে আমরাই জাপানের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করছি—কেননা বিপক্ষীয়েরাও অন্যান্য শক্তির কাছে সাহায্য চাইছে। যাই হোক, আমার আশা আছে যে ভারতস্থিত আমার দেশবাসীদের কছ থেকে আমরা এত বেশী সাহায্য পাব যে, জাপানের কাছ থেকে আমাদের অতি সামান্য সাহায্য নিলেও চলবে। কোন প্রকারে ভারতস্থিত আমাদের দেশবাসীরা যদি নিজ চেষ্টায় নিজেদের মুক্তি বিধান করতে পারে কিংবা বৃটিশ গবর্নমেণ্ট যদি আপনার “ভারত ছাড়ো” প্রস্তাব গ্রহণ করে তদনুযায়ী কাজ করে, তবে আমার চেয়ে বেশী সুখী কেউ হবে না। আমরা কিন্তু এই ধারণা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি, উল্লিখিত দুটি সম্ভাবনার একটিও বাস্তব রূপ পরিগ্রহ করবে না এবং সশস্ত্র সংগ্রাম অনিবার্য্য।

 মহাত্মাজী, প্রসঙ্গ শেষ করার পূর্ব্বে আমি আর একটি বিষয়ের উল্লেখ করব—সেটা বর্ত্তমান যুদ্ধের শেষ ফলাফল-ঘটিত প্রশ্ন। তারা বিজয় সম্বন্ধে নিশ্চিত, এই ধারণা সৃষ্টির জন্যে ইংরেজরা যে ধরণের প্রচারকার্য্য চালাচ্ছে তার সঙ্গে আমি ভালভাবেই পরিচিত। কিন্তু আমি আশা করি, আমার দেশবাসী সেই প্রচারে প্রতারিত হবে না এবং এযুদ্ধে ইঙ্গ-মার্কিণ শক্তিদ্বয় জয়লাভ করবে এই ভ্রান্ত ধারণার বশবর্ত্তী হয়ে স্বাধীনতার প্রশ্নে ব্রিটেনের সঙ্গে আপোষের কথা ভাববে না। যুদ্ধকালীন অবস্থার মধ্যে খোলা চোখে সারা পৃথিবী ভ্রমণ করে, ইন্দো-ব্রহ্ম সীমান্তে

৬৮