পাতা:দুই বাড়ি - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উহারা আসিলে। এত বেলা যখন হইয়া গেল-হয়তো আর আসিবে না। সাড়ে-আটটা পৰ্যন্ত রাস্তার উপর অপেক্ষা করিয়া নিধু বাড়ি ফিরিতেছেপথে নৃপেনের সঙ্গে দেখা । সে বলিল-বারে, কোথায় গিয়েছিলেন বেড়াতে ? আপনার বাড়ি বসে বসে —কেন ? --দিদি সেই সাড়ে-সাতটার সময় আপনাকে ডাকতে পাঠিয়েচে- জলখাবার খাবেন বলে খাবার সাজিয়ে বসে আছে-আচ্ছা, তুমি যাও নৃপেন। আমি নেয়ে নিই পুকুরে-তারপর যাচ্চিস্নান সারিয়া ফিটফাট হইয়া মজুদের বাড়ি যাইতে নটা বাজিয়া গেল। বাড়ির ভিতর পা না দিতেই মণ্ডু রান্নাঘরের দাওয়া হইতে বলিল-আজকাল আপনার হয়েচে কি ? লুচি জুড়িয়ে জল হয়ে গেল। কখন ডাকতে পাঠিয়েচি নৃপেনকে-বেশ লোক যা হোক! মঞ্জুর মা বসিয়া নিজের হাতেই ওল কুটিতেছেন, তিনিও বলিলেন-এস বাবা । মধু এখনো খায়নি, বলে-অতিথিকে না খাইয়ে আগে খেতে নেই। আমি বললাম, ও তো ঘরের ছেলে, ও আবার অতিথি কোথায় মা, তুই খেয়ে নে। মেয়ের সবই বাড়াবাড়ি। নিধু অপ্রতিভ হইল। সঙ্গে সঙ্গে এক অপূর্ব উত্তেজনা ও আনন্দে তাহার সারা শরীর যেন ঝিমঝিম করিয়া উঠিল। মধু না খাইয়া আছে সে খায় নাই বলিয়া-কেন ? কই, কোনো মেয়ে তো এ পৰ্যন্ত তাহার না খাওয়ার জন্য নিজেকে অভুক্ত রাখে নাই! অন্তত কোনো শিক্ষিত তরুণী বড়লোকের মেয়ে তো নয়ই। নিজের সৌভাগ্যকে সে যেন বিশ্বাস করিতে পারে না । মঞ্জু তাহাকে ভিতরের ঘরের বারান্দায় খাইতে দিযা কাছে দাড়াইয়া রহিল। বলিল-আজ যে সেই প্লে সিলেক্ট করার দিন-তাও আপনি ভুলে বসে আছেন। নিধুদা ? SOO