পাতা:দুই বাড়ি - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

--আপনার লঙ্গে ইণ্টারভিউ করিয়ে দেব ম্যাজিস্ট্রেটের। -আমার মতো লোকের সঙ্গে ইণ্টারভিউ ? -এসব ভালো । আপনার পসারের পক্ষে এগুলো বড় কাজের হবে । --আপনার যা ইচ্ছে, স্তর। শনিবারে কোর্ট বন্ধ হইতে চারিটা বাজিল। নিধু সঙ্গে সঙ্গে বাসায় আসিয়া কোর্টের পোশাক ছাড়িয়া সাধারণ পোশাক পরিয়া কিছু খাইয়া লাইল। পরে বাসার চাবি চাকরের হাতে দিয়া কুড়লগাছি রওনা হইল। এতদিন সে ভাবিবার অবসর পায় নাই। নানা গোলমালে দিন কাটিয়াছে। জামিন মুভ করিবার ফি না পাইলে আজ বাড়ি যাওয়াই ঘটিয়া উঠিত না। এতদূর রাস্তা হাঁটিয়া বাড়ি পৌঁছিতে সন্ধ্যা হইয়া যাইবে। তা হইলেই বা কি ? মঞ্জুর সঙ্গে সে আর দেখা করিবে না। তাহার সঙ্গে মঞ্জুর আর দেখাশোনা হওয়া ভুল। দুদিন পরে সে পরস্ত্রী হইতে চলিয়াছে-এখন তাহার সঙ্গে মেলামেশা করা মানে কষ্ট ডাকিয়া আনা । অতএব আর গিয়া সে মঞ্জুর সহিত দেখা করিবে না। মিটিয়া গেল। কিন্তু সে যতই গ্রামের নিকট আসিতেছিল—তাহার সঙ্কল্পের দৃঢ়তা সম্বন্ধে নিজের মনেই সন্দেহ জাগিল। মধুকে না দেখিয়া থাকিতে পরিবে তো ? কেন পরিবে না ? কতদিনের বা আলাপ ? খুব পরিবে এখন। পারিতেই হইবে। নিধুর মা বলিলেন-বাবা! কি ছেলে তুমি! এতদিন পরে মনে পড়ল? --কি করি বল। এক পয়সা রোজগার নেই, এসে কি করব ? --নাই বা থাকল রোজগার । তোকে দেখতে ইচ্ছে করে না। আমাদের ? কালী, জল নিয়ে আয় । নিধু হাত মুখ ধুইয়া খাবার খাইয়া মায়ের সঙ্গে রান্নাঘরের দাওয়ায় বসিয়া গল্প করিতে লাগিল। হঠাৎ নিধুর মা মনে পড়িয়া যাওয়ার সুরে বলিয়া উঠিলেন-ভালো কথা ! তোকে যে মধু কতবার আজ ডেকে পাঠিয়েছিল! SOc