পাতা:দুই বাড়ি - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈকালের দিকে সিধু ভাবিল সে মধুদের বাড়ি যাইবে কিনা। মন সেখানে যাইবার জন্যই উন্মুখ হইয়া আছে যেন। অথচ বেশ বােঝা যাইতেছে সেখানে আর তাহার যাওয়া উচিত নয়। বেলা পড়িয়া' আসিল-তবুও নিধু ইতস্তত করিতে লাগিল—এবং তারপরই সে হঠাৎ কিসের টানে সব কিছু দ্বিধা ভুলিয়া কখন উহাদের বাড়ির দিকে রওনা হইল। মঞ্জুদের বৈঠকখানার কাছে গিয়া মনে হইল-আজ মঞ্জু তাহাকে ডাকিয়া পাঠায় নাই তো ! অথচ রোজই ডাকিয়া পাঠায়। মনের মধ্যে কোথা হইতে অভিমান আসিয়া জুটল। নিধু আর মধুদের বাডি না ঢুকিয়া গ্রামের বাহিরে রাস্তার দিকে বেড়াইতে গেল । পূজার আর বেশি দেরি নাই। আকাশে বাতাসে যেন আসন্ন শারদীয়া পূজার আভাস, আকাশ মেঘমুক্ত, সুনীল-পাকা রাস্তার ধারে ঝোপেঝাপে মটরলতায় থোকা-থোকা ফল ধরিয়াছে।-আউস ধান কাটা হইয়া গিয়াছে—আমন ধানের নাবাল ক্ষেত ভিন্ন মাঠ প্ৰায় শূন্য। পনরোদিন বৃষ্টি হয় নাই।-গুমটি গরম, কোনোদিকে একটু হাওয়া নাই। একটা সঁকোর উপর বসিয়া নিধু ভাবিতে লাগিল—মধু আজ তাঁহাকে কেন ডাকিল না ? ওবেলা তাহার কথাবার্তায় হয়তো মনে দুঃখ পাইয়াছে। শিশিবোতলের মাঝখানে উপবিষ্ট মঞ্জুর ভরসাহার করুণ মুখের ছবি মনে আসিল । মঞ্জুকে সে কোনো দুঃখ দিবে না। এ ব্যাপার লইয়া আর কোনো কথা সে মঞ্জুকে বলিবে না। কিন্তু রবিবার তো ফুরাইয়া আসিল। সন্ধ্যার দেরি নাই। আর কতক্ষণ ? সত্যই কি সে মধুদের বাড়ি দেখা করিতে যাইবে না ? তাহা হয় না। এখন গেলে তবুও রাত ন’টা পর্যন্ত থাকিতে পরিবে। নয় তো আবার সাতদিন আদর্শন। থাকা অসম্ভব তাহর পক্ষে । নিজের বাড়ির সামনে আসিয়া নিধু ইতস্তত করিতেছে—এমন সময় সে Sca.