পাতা:দুই বাড়ি - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পড়িতে হইবে। সামনের শনিবারে বরং যাইবে না বাড়ি-সুনীলবাবু এবং র্তাহার বাবা যেদিন মেয়ে দেখিতে যাইবেন-সেদিন তাহার না থাকিলেও কোনো পক্ষের কোনো ক্ষতি নাই । আজ শরীরটা কিন্তু সকাল হইতেই ভালো নয় । জরজাড়ি হইতে পারে । সারা গায়ে যেন বেদনা। তবুও বাড়ি আজ তাহার যাওয়া চাই। আজ মঞ্জুকে সে পাইবে পুরোনো দিনের মতো। বাড়িতে ভাবী আত্মীয় কুটুম্বের ভিড় করিবে না। আজ । শরতের রৌদ্র নীল আকাশের পেয়ালা বাহিয়া উপচাইয়া পডিতেছে। পথের ধারে ছায়া ঝোপে সেই দিনের মতে মটরলতার দুলুনি। ছোট গােয়ালে-লতায় ফুল ধরিয়াছে। শালিক ও ছাতারে পাখির কলরব মাথার উপরে। পথে হাঁটিতে আরম্ভ করিয়াই নিধু দেখিল তাহার শরীর যেন ক্রমশ খারাপ হইয়া আসিতেছে। শরতের ছায়াভিরা বাতাস গাযে লাগিলে যেন গা শিরশির করে। নিধু মাঝে মাঝে কেবলই বসিতে লাগিল—এ সঁকোয় বসে, আবার ও সাকোয় বসে। সঁাকোর নিচেই গত বর্ষার বদ্ধ জল, অন্য সময় তাহার যে একটা গন্ধ আছে-ইহাই নিধুর নাকে লাগিত নাআজ গন্ধটায় তাহার শরীরের মধ্যে যেন পাক দিতেছিল । সঁকোয় বসিয়া অন্যমনস্কভাবে বাশবনের মাথার উপরে মেঘমুক্ত নীল আকাশে শরতের শুভ্ৰ মেঘের খেলা লক্ষ্য করিতেছিল। মেঘের দল লঘুগতিতে উড়িয়া চলিতে চলিতে কত কি জিনিস তৈরি করিতেছে-কখনো দুৰ্গ, কখনো পাহাড়, কখনো সিংহ, কখনো বহুদূরের কোন অজানা দেশ-উপরের বায়ুস্রোত আবার পর-মুহুর্তে সেগুলোকে চূর্ণ করিয়া উড়াইয়া দিতেছেএই আছে, এই নাই-আবার নব নব শুভ্ৰ মেঘসজা, আবার কল্পনায় কত কি নতুনের সৃষ্টি। ভঙ্গুর মেঘের স্বষ্টি-সে। আবার টেকে কতক্ষণ ? SG R