পাতা:দুই বাড়ি - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাৰ্থক হয়েচে, প্ৰাণ পাওয়া গেল এই বড় কূথু। মিথ্যে কথা বলব কেন, সবাই দেখেচে শুনেচে, করেচে। ভুবন গাঙ্গুলির মেয়ে হৈম পর্যন্ত শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার আগে রোজ একবার করে আসন্ত-মা সিদ্ধেশ্বরী কালী মুখ তুলে চেয়েচেন—সকলে তো বলেছিল। এই বয়েসের টাইফয়েডমধু! অনেক দিন পরে নিধুর রোগাক্ষীণ স্মৃতিপটে একখানি আনন্দময়ী বালিকামূর্তি অস্পষ্ট ভাসিয়া উঠিল। অনেক দিন এ নাম কানে যায় নাই। কঠিন রোগ তাহাকে মৃত্যুর যে ঘনান্ধকার রহস্যের পথে বহুদূর টানিয়া লইয়া গিয়াছিল--হয়তো সে পথের কোথাও কোনোদিন চেতনাহীন মুহূর্তে সে একটি বালিকা-কণ্ঠের সহানুভূতি মাখা উৎসুক স্বর শুনিয়া থাকিবেহয়তো তাহার দয়ালু হস্তের মৃদু পরশ অঙ্গে লাগিয়া থাকিবে-নিধু তাহা চিনিতে পারে নাই-ধারণাও করিতে পারে নাই । সে কিছু বলিবার আগেই তাহাব মা বলিলেন-ও শনিবারে যাবার দিনটাতেও মধু এসে কতক্ষণ বসে রইল-বললে বাবার ছুটি ফুরিয়ে গেল তাই যেতে হচ্চে জ্যাঠাইম-নইলে নিধুদাকে এ ভাবে দেখে যেতে কি মন সরে। বাবার কোর্ট খুলবে জগদ্ধাত্রী পুজোর পরে—আর থাকবার যে নেই। চোখের জল ফেললে সেদিন বাছা আমার ! একেবারে যেন আমার পেটের মেয়ে-বললাম যে । অমন মেয়ে কি হয় আজকালকার বাজারে! তাই তো বলি মায়ের বাকি কথা নিধুর কাণে গেল না। 846