পাতা:দুই বাড়ি - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বললাম-তুই গিয়ে তোর দাদার কাছে বল না ? বললে-না মধু আমার ভয় করে । নিধু মায়ের পায়ের ধূলা লইয়া রওনা হইবার পূর্বে ছােট ভাই-বোনেরা আসিয়া কাড়াকড়ি করিয়া পায়ের ধূলা লইবার চেষ্টায় পরস্পর ধাক্কাধাঙ্কি করিতে লাগিল। নিধু শাসনের সুরে বলিল-রমু, চব্বিশখানা ইংরেজিংলা হাতের লেখার কথা যেন মনে থাকে । শনিবারে এসে না দেখলে পিঠের ছাল তুলব। রমেশ দাদার সম্মুখ হইতে সরিয়া গেল। বড় লোকের সম্মুখে পড়িলেই যত বিপদ, আড়ালে থাকিলে বহু হাঙ্গামার হাত হইতে রেহাই 9tter is পথে পা দিয়া নিধু একবার জজবাবুর বাড়ির দিকে চাহিল। এখনো বোধ হয় কেউ ওঠে নাই-বড়লোকের বাড়ি, তাড়াতাড়ি উঠবার গরজই द किएज । ছায়াভিরা পথে শরৎ-প্ৰভাতের স্নিগ্ধ হাওয়ায় যেন নবীন। আশা, অপরিচিত অনুভূতি সারা দেহের ও মনের নব পরিবর্তন আনিয়া দেয়। গাছের ডালে বন্য মটরলতা দুলিতেছে, তিৎপল্লার ফুল ফুটিয়াছে’-এবার বর্ষায় যেখানেসেখানে বনকচুর ঝাড়ের বৃদ্ধি অত্যন্ত যেন বেশি। নিধু আশ্চৰ্য হইয়া ভাবিল-এসব জিনিসের দিকে তাহার মন তো কখনো তেমন যায় না, আজ ওদিকে এত নজর পড়িল কেন ? শরৎ-প্ৰভাতের স্নিগ্ধ হাওয়ার সঙ্গে মিশিয়া আছে কাল বিকালে শোনা মঞ্জুর গানের সুর। সে সুর তাহার সারারাত কানে ঝঙ্কার দিয়াছে—শুধুমঞ্জুর গানের সুর নয়-তাহার সুন্দর ব্যবহার, তাহার মুখের সুন্দর কথা-ঘাড় নাড়িবার বিশেষ ভঙ্গিটি। বড় বড় কালো চোখের চপল চাহনি । 88