পাতা:দুধ-ভাত - ইন্দিরা দেবী চৌধুরানী.pdf/১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দুধ-ভাত

আজ ভালো ভালো রান্না হচ্ছে, সব্বাই আজ বাড়ীতে আছে। আরো কারা যেন সব আসবে। মিণ্টু পড়া সেরে একবার রান্নাঘরে গেল। —সত্যিই আজ অনেক ঘটা রান্নাঘরে। ঠাকুমা পর্য্যন্ত এসে গেছেন রান্নাঘরে।—মা উনানের পাশে বসে বড় বড় মাছের খণ্ডগুলো ভেজে তুলছেন, ঠাকুমা তদারক করতে করতে বলছেন: এবার মালাইকারীটা চড়িয়ে দাও বড় বৌমা। ছোট বৌমা, এ দুধটা কিসের গা, মালাইকারীর?

 ছোট কাকিমা বললেন: না, না, এ দুধ জ্বাল দিলাম এবার বাটিতে তুলবো, মালাইকারীর দুধ পাথর বাটিতে আছে। এই ব’লে ছোট কাকিমা সারি সারি বাটিতে নাম ক’রে ক’রে দুধ তুলতে লাগলেন— এটা সন্তুর, এটা নাণ্টুর, এটা হলো ছোট খোকনের—এটা মিণ্টুর।—ব্যস, মিণ্টুর আর দেখতে হবে না, ছিটকে বেরিয়ে এলো রান্নাঘর থেকে। আজ যদি সে বাড়ীতে ভাত খায়, কী বলেছে! সন্তু, নাণ্টু, ছোট খোকন ওরা হলো একরত্তি ছোট্ট, ওরা দুধ-ভাত খাবে। মিণ্টু, এখন বড় হয়নি? আর কোনো কথা নেই—কেবল দুধ-ভাত।

 মিণ্টুর তাড়াতাড়ি ক’রে বেরিয়ে আসা দেখে মা একবার ডাকলেন: মিণ্টু, কোথায় যাচ্ছ? এসো না, ক্ষিদে পেয়েছে?

 মিণ্টুর তখন চোখে জল এসেছে—ক্ষিদে পেয়েছে। দূর থেকে চেঁচিয়ে মিণ্টু, বললে: না ক্ষিদে পায়নি—আমি নানুদের বাড়ী বেড়াতে যাচ্ছি।

 —শীগগির এসো কিন্তু।

 শীগগির এসো! সবাই ভালো ভালো জিনিষ খাবে আর মিণ্টুর জন্য দুধ-ভাত! মিণ্টু, আর এ বাড়ী এসেছে!—মনে মনে এই কথা