পাতা:দুনিয়ার দেনা - হেমলতা দেবী.pdf/১০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০২
দুনিয়ার দেনা

ভেবেছে তাই; বাউল ও তাদের সঙ্গে আসা যাওয়া করবে।

 রোজ তারা যায়, সাঁঝে ফেরে; সুরীর পল্প, বাউলের গান, কালামাঝির হাসি হাসি মুখ খেয়ার বুকটাকে আজ কাল কেমন জমিয়ে রাখে, পারাপারের লোকেরা বড় খুসীতেই পার হয়।

 কালামাঝিব খেয়ায় আজকাল খুব ভীড়। তার খেয়ায় যাবার জন্যে লোকেরা ঘাটে এসে ঠেলাঠেলি করতে থাকে। যারা একটু আগে আসে তারাই গিয়ে খেয়ার চড়ে বসে, বোঝাই হলেই মাঝি খেয়া ছেড়ে দেয়।

 কালামাঝি আগের চেয়ে ঢের বেশী লোক এখন খেয়ায় বোঝাই করে তবুও সকলকে ধরাতে পারে না। যারা পড়ে থাকে তীরে দাঁড়িয়ে খেয়াখানার দিকে চেয়ে চেয়ে তারা দেখে, দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বাউলের গান শোনে, মনে ভাবে কাল আমি সকলের আগে এসে খেয়ায় চড়ে বসব।

 বাউলের সঙ্গে, সুরীর, কালামাঝির খুব ভাব। খেয়া ছাড়বার একঘণ্টা আগে ওরা দুজনে এসে খেয়ায় বসে থাকে। খেয়ার বুকে ওরা যেন নিজেদের ভাবের ঘর বেঁধেছে। এইখানে বাউলের গান, সুরীর গল্প, কালামাঝির প্রাণের খুসী বুকের ভিতর থেকে যেন উথলে পড়ে—সবাইকে টানতে থাকে।