পাতা:দুনিয়ার দেনা - হেমলতা দেবী.pdf/১১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১২
দুনিয়ার দেনা

মিছে তুই মরিস্ ঘুরে,
তারে তোর বাজছে যে সুর
সেই সুরে নে পরাণ পুরে।

 বীণা রেখে দিয়ে একমনে বীণকর গান শুনছে, সুরটা আজ সে প্রাণে বসিয়ে নেবে।

 বাউল গাইছে

‘ওরে ও ক্ষ্যাপা রাউল
মিছে তুই মরিস ঘুরে।’

 নদীর বুকে তুফান জেগেছে, ঝড় এসে পড়ল বলে, মেঘে আকাশ ঘেরা।

 খেয়াখানা একবার এদিকে কাৎ হয় একবার ওদিকে; উল্টে গেল আর কি! ছোট ছেলেরা ভয়ে চীৎকার করে ওঠে, বড়রা তাদের ধরে থেকে সামলায়।

 কালামাঝি অটল, হাল ধরে সে বসেই আছে, মুখে ভয়ের চিহ্ন মাত্র নেই, এর চেরে কত ভারী তুফানে সে পাড়ি দিয়েছে এতো আর তুলনায় কিছুই নয়। এটুকু তুফান সে গ্রাহ্যই করে না।

 সুরী কালামাঝির পায়ের কাছে বসে খেয়া কাৎ হলেই ভয় পেয়ে সে কালামাঝির হাঁটু দুটো জড়িয়ে ধরে। কালামাঝি বলে “ভয় পাচ্ছ?” সুরী বলে না, কই ভয় পাচ্ছি! কালামাঝি হাসতে থাকে।

 তুফান ঠেলে মাঝি পাড়ি দিচ্ছে। কি তার পাড়ি