পাতা:দুনিয়ার দেনা - হেমলতা দেবী.pdf/১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বোঝা বওয়া

ছ’মাস ধ’রে আপনার এই মোহরের বোঝা বয়ে ফিরচি, নিন্ আপনার মোহরের তোড়া”।

 পথিক একটু অবাক্ হ’য়ে আমার মুখের দিকে চাইলেন—বোধ হয়, যেন ভাবলেন লোকটা কি প্রকৃতির মানুষ!

 তোড়া নিয়ে পথিক নিজের গন্তব্য পথে চ’লে গেলেন আমিও বাড়ী ফিরলুম।

 সে দিন আর তাঁর মোহরের বোঝা নিয়ে আমি তাঁর সঙ্গে যাই নি। সে বোঝা অনেক দিন ধরে বয়েছিলুম ব’লে আর বইবার ইচ্ছা ছিল না। তা ছাড়া পথিকের হাতে এবার আর অন্য বোঝা না থাকায় নিজের সোণার বোঝা তিনি অনায়াসে ব’য়ে নিয়ে যেতে পারবেন জানতুম।

 দিন দুই পরে একটা লোক এসে আমায় ব’ল্‌ল দেশের রাজা তোমায় ডেকে পাঠিয়েছেন। আমি ত শুনে অবাক্! রাজা আমাকে ডেকেছেন, কি আশ্চর্য্য। রাজার আমায় কি দরকার? শেষে ভাবলুম, হয় ত বা সেখানেও বোঝা বইবার জন্যে কোন বেকার লোকের দরকার আছে।

 যাই হোক্, আমি ত রাজ-সদনে যাত্রা ক’রলুম। গিয়ে দেখি, মহারাজ সিংহাসনে ব’সে—তিনিই আমার সেই সোণার তোড়া-ওয়ালা সদাশয় পথিক।