পাতা:দুনিয়ার দেনা - হেমলতা দেবী.pdf/১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দুনিয়ার দেনা

 দেখে প্রথমটা আমি চমকে গিয়েছিলুম, ভাবলুম, না জানি কপালে কি আছে। পরে তিনি ব’ল্লেন, আমি তোমার সততায় বিস্মিত ও মুগ্ধ হ’য়েছি। তুমি আর রাস্তার লোকের বোঝা ব’য়ে দিন কাটিও না, আমার রাজ্যের কোন একটী উচ্চ বেতনের কর্ম্মভার গ্রহণ ক’রে আমাদের সকলকে সুখী ও আনন্দিত কর।

 তখন আমি বুঝলুম,ব্যাপারটা কি? বল্লুম, “মহারাজ আমার ত কাজ ক’রে বেতন নেবার যো নেই, আমি যে আমার ভক্তির আজ্ঞায় কাজ করে থাকি। বেতন নিলেই আমি মারা প’ড়ব। মহারাজ এটা আমার দ্বারা হবে না”।

 রাজা বল্লেন, “তবে তুমি বিনা বেতনেই আমার কোন একটা কাজ গ্রহণ কর। নতুবা আমরা সুখী হ’তে পারছি নে”।

 “তাই হবে মহারাজ, কাল থেকে আমি প্রতিদিন আপনার দরবারের বড় দরওয়াজায় উপস্থিত থাকব, যে কেউ রাজদর্শনে আসবে তার সঙ্গে যদি কোন বোঝা থাকে তাই নামিয়ে নেওয়ার ভার আমার উপর রইল। আপনি যখন আমাকে নিজের মধ্যেই আটক রাখতে চাইছেন তখন এই কাজটুকু নিয়েই আমি নিজকে এখানে বেঁধে রাখব। বাঁধার মধ্যে আমার ঐটুকু ফাঁক, ঐ বোঝা-নামাটুকু দেখাতেই আমার আনন্দ।”