পাতা:দুনিয়ার দেনা - হেমলতা দেবী.pdf/২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬
দুনিয়ার দেনা

 খুসী হয়ে ফকির বল্লেন “চলুন তবে নৌকায় ওঠা যাক।”

 দুজনে নৌকায় চড়লেন। জল ঝড়ের মুখে নৌকা ভেসে চল্‌ল। বৃষ্টির জোর যত বেশী ছিল ঝড়ের তত নয়! তাই কোন রকমে নৌকাখানা এগোতে লাগল।

 উভয়েই নিস্তব্ধ। হঠাৎ নিস্তব্ধতা ভেঙ্গে ফকির বলে উঠলেন “দেবদূত আজ এই অন্ধকারটা আমার বুকের উপর বড় বেশী করে চেপে ধরছে, তার উপরে এই ঝড় বাদল আমার বুকের মধ্যে কেমন একটা তুফান তুলছে, আমি তোমাকে একটি প্রশ্ন না করে থাকতে পারছি নে। তুমি বল তোমার জীবনের রহস্য আমাকে। তোমার জীবনের রহস্যটি ভাঙলে আমার বুকের এই অন্ধকারের চাপ সরে গিয়ে যেন একটু আলো দেখা দেবে, যেন আমি হাল্কা হয়ে বাঁচব আমার মনে হয়”।

 দেবদূত বল্লেন “এতে যদি তোমার উপকার হয়, তোমার বুকের বোঝা এতে যদি নেমে যায় তবে শোন আমার কাহিনী! এই বলে দেবদূত নিজের পূর্ব্বকথা বলতে আরম্ভ করলেন্—

 “সতের বছর বয়সে, বাপের আদরের ধন, বংশের একমাত্র সন্তান, রাজ্যের আশা ভরসা স্থল আমি ডুবে মরেছি জেনে রাজ্যময় যখন হাহাকার পড়ে গিয়েছিল, আমি তখন নদীর তলে তলিয়ে তাচেতন। কোথায় কদিন