পাতা:দুনিয়ার দেনা - হেমলতা দেবী.pdf/৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পথের মানুষ
৪৭

বাড়ী যাবে না। ওরা আমাকে ঘৃণা করে। আমি পতিতা।

 মা। পথে বেরিয়ে পড়তে পারলে পতিতা অপতিতা সব এক হয়ে যাবে, কেউ আলাদা থাকবে না। পথে কি আর কেউ কারো পরিচয় নেয়? বেরিয়ে পড়, পথে বেরিয়ে পড়, আকাশে কর ঘর বাতাসে কর ভর দুনিয়াকে কর দেশ, সহজে হবে শেষ।

 কথা শুনে স্ত্রীলোকটি অবাক্ হয়ে লোকটার মুখের দিকে চেয়ে রইল। তার মাথার চারিদিকটা যেন খোলা বোধ হতে লাগল। সে তাড়াতাড়ি বলে উঠল, “আমার নাম ধাম যে বদলাতে হবে বাবা আমাকে যে সবাই চেনে।

 মা। নামে কি দরকার? নাম নিয়েই তো যত ল্যাটা। নাম ছেড়ে দাও অনেক গোল মিটে যাবে। আর ধাম? কেউ জিজ্ঞাসা করলে, দেখিয়ে দিও, ঐ হাড়িনী আর চামারনিদের ঘর।

 স্ত্রী। দেখিয়ে দাও, বাবা! আমাকে পথ দেখিয়ে দাও। কেমন করে এ পথে চল্‌ব ভালো করে বুঝিয়ে দাও।

 মা। এ পথ কাউকে দেখিয়ে দিতে হয় না, নিজেই জানা যায়; যার পথ সে নিজেই চিনে চলতে পারে ঘরে যাও, ঘরে বসেই পথ দেখতে পাবে।