পাতা:দুনিয়ার দেনা - হেমলতা দেবী.pdf/৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পথের মানুষ
৪৯

সেইখানে কবরস্থ করবে। তার মাথাটা ঘুরে গিয়ে সেইখানে সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেল।

 যখন ঢোক মেল্‌ল, দেখে একটা মাঠের মধ্যে সে শুয়ে চারিদিক অন্ধকার, মাথার উপর খোলা আকাশ, তার বুকে এক রাশ তারা জ্বল্‌ছে; কিছু দূরে সেই লোকটা নিজের মনে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

 লোকটাকে বাগানে এনে রাখার পর থেকে দিনের বেলায় তাকে পথে ঘুরে বেড়াতে কেউ কোন দিন দেখেনি, কিন্তু রাতের বেলায় রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতে তাকে অনেকেই দেখেছে।

 ইদানীং সবাই তাকে চিনেছিল, কেউ আর এতে কিছু ভাবতো না। জানতো, লোকটার এই রকমই স্বভাব।

 দূরে মাঠের মধ্যে লোকটাকে দেখে স্ত্রীলোকটির বুকের ভেতর আজ বড্ড নাড়া দিয়ে উঠল। সেই যেন তাকে টেনে নিয়ে কোথায় চলেছে। আপনাতে সে আপনি যেন নেই।

 উঠে সে দাঁড়াল, পা টলছে, কোন রকমে এগিয়ে লোকটার দিকে চল্ল। কাছে গিয়ে বলে উঠল, “বাবা, এ আমি কোথায় এসেছি?”

 লো। এই যে এখানে, বাইরে।

 স্ত্রী। এখানে কি আছে?

 লো। সব আছে, যা চাও।