পাতা:দুনিয়ার দেনা - হেমলতা দেবী.pdf/৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কাপালিকের কপাল
৬৩

কেউ জানে না চোদ্দ পনের বছর ‘যোগী মহারাজের’ আশ্রমে সবাই তাকে দেখছে। ‘যোগী মহারাজ’ চলে গেছেন আশ্রমটি এখন দৈবপ্রভারই হাতে। অনেকগুলি সন্ন্যাসিনী নিয়ে দৈবপ্রভা এখানে বাস করে। সন্ন্যাসিনীদের শিক্ষা দীক্ষার সমস্ত ভারই দৈবপ্রভার উপর। সকলকে সে শিখিয়ে তুল্‌ছে।

 দৈবপ্রভার একটি বিশেষ কাজ হচ্ছে দুরন্ত কাপালিকদের হাত থেকে ভৈরবীদের বাঁচান। কত ভৈরবীকে যে তাদের গ্রাস থেকে সে ছাড়িয়ে এনেছে গুণে শেষ করা যায় না। অনেককে দেশে ফিরে পঠিয়েছে, তারা ঘরের বউ ঝি ঘরে গেছে কেউ জানতে পারেনি এতদিন কোথায় ছিল। অনেককে শিক্ষা দিয়ে মানুষ করে তুলে, তীর্থে তীর্থে আড্ডা তৈরী করে তাদের সেখানে রেখেছে ঐ রকম সব মেয়েদের বাঁচাবার জন্যে। যারা এখনো তৈরী হয়নি তাদেরই কেবল নিজে কাজে রেখে তৈরী করচে।

 এহেন সন্ন্যাসিনী দৈবপ্রভার সঙ্গে আজ গঙ্গাতীরে মধুমতির দেখা হয়েছে।

 দুজনে এসে তারা আশ্রমের মধ্যে ঢুকল। দৈবপ্রভাকে দেখে আশ্রমের সব সন্ন্যাসিনীরা দৌড়ে এসে ঘিরে দাঁড়ালো। নতুন একটি সন্ন্যাসিনীকে দেখে চোখে মুখে তাদের আনন্দ ফুটে উঠল, বুঝল তাদেরই মত একজন।