বিমলা যখন দেখিলেন যে, চতুর ওস্মান অন্যত্র গেলেন, তপন তিনি ভরসা পাইলেন যে, কৌশলে মুক্তি পাইতে পারিবেন। শীঘ্র তাহার উপায় চেষ্টা করিতে লাগিলেন।
প্রহরী কিয়ৎক্ষণ দণ্ডায়মান থাকিলে বিমল তাহার সহিত কথোপকথন আরম্ভ করিলেন। প্রহরী হউক, আর যমদূতই হউক, সুন্দরী রমণীর সহিত কে ইচ্ছাপূর্ব্বক কথোপকথন না করে? বিমলা প্রথমে এ ও সে নানাপ্রকার সামান্য-বিষয়ক কথাবার্তা কহিতে লাগিলেন। ক্রমে প্রহরীর নাম ধাম গৃহকর্ম্ম সুখদুঃখ-বিষয়ক নানা পরিচয় জিজ্ঞাসা করিতে লাগিলেন। প্রহরী নিজ সম্বন্ধে বিমলার এতদূর পর্য্যন্ত ঔৎসুক্য দেখিয়া বড়ই প্রীত হইল। বিমলাও সুযোগ দেখিয়া ক্রমে ক্রমে নিজ তুণ হইতে শাণিত অস্ত্র সকল বাহির করিতে লাগিলেন। একে বিমলার অমৃতময় রসালাপ, তাহাতে আবার তাহার সঙ্গে সঙ্গে সেই বিশাল চক্ষুর অব্যর্থ কটাক্ষ-সন্ধান, প্রহরী একেবারে গলিয়া গেল। যখন বিমলা প্রহরীর ভঙ্গিভাবে দেখিলেন যে, তাহার অধঃপাতে যাইবার সময় হইয়া আসিয়াছে, তখন মৃদু মৃদু স্বরে কহিলেন, “আমার কেমন ভয় করিতেছে, সেখজী, তুমি আমার কাছে বসো-না!”