পাতা:দুর্গেশনন্দিনী বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রেমিকে প্রেমিকে
৯৭

 “সেখজী! বলিতে লজ্জা করে, কিন্তু তুমি যদি আমার স্বামী হইতে, তবে আমি কখন তোমাকে যুদ্ধে আসিতে দিতাম না।”

 প্রহরী আবার নিঃশ্বাস ছাড়িল। বিমলা কহিতে লাগিলেন, “আহা! তুমি যদি আমার স্বামী হ’তে!​”

 বিমলাও এই বলিয়া একটী ছোট রকম নিঃশ্বাস ছাড়িলেন, তাহার সঙ্গে সঙ্গে নিজ তীক্ষ-কুটিল-কটাক্ষ বিসর্জ্জন করিলেন; প্রহরীর মাথা ঘুরিয়। গেল! সে ক্রমে ক্রমে সরিয়। সরিয়া বিমলার আরও নিকটে আসিয়া বসিল, বিমলাও আর একটু তাহার দিকে সরিয়া বসিলেন। বিমলা প্রহরীর করে কোমল কর-পল্লব স্থাপন করিলেন। প্রহরী হতবুদ্ধি হইয় উঠিল:

 বিমল কহিতে লাগিলেন, “বলিতে লজ্জা করে, কিন্তু তুমি যদি রণজয় করিয়া যাও, তবে আমাকে কি তোমার মনে থাকিবে?”

প্র। তোমার মনে থাকিবে না?
বি। মনের কথা তোমাকে বলিব?
প্র। বল না—বল!
বি। না, বলিব না, তুমি কি বলিবে?
প্র। না না—বল, আমাকে ভৃত্য বলিয়া জানিও।
বি। আমার মনে বড় ইচ্ছা হইতেছে, এ পাপ স্বামীর মুখে কালি দিয়া তোমার সঙ্গে চলিয়া যাই।

 আবার সেই কটাক্ষ। প্রহরী আহ্লাদে নাচিয়া উঠিল

প্র। যাবে?

 দিগ্‌গজের মত পণ্ডিত অনেক আছে!

 বিমলা কহিলেন, “লইয়া যাও ত যাই!”