পাতা:দুর্গেশনন্দিনী বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম পরিচ্ছেদ
আয়েষা

 জগৎসিংহ যখন চক্ষুরুন্মীলন করিলেন, তখন দেখিলেন যে, তিনি সুরম্য হর্ম্ম্যমধ্যে পর্য্যঙ্কে শয়ন করিয়া আছেন। যে ঘরে তিনি শয়ন করিয়া আছেন, তথায় যে আর কখন আসিয়াছিলেন, এমত বোধ হইল না; কক্ষটি অতি প্রশস্থ, অতি সুশোভিত; প্রস্তরনির্ম্মিত হর্ম্ম্যতল পাদস্পর্শ-সুখজনক গালিচায় আবৃত; তদুপরি গোলাবপাশ প্রভৃতি স্বর্ণরৌপ্য-গজদন্তাদি নানা মহার্য-বস্তু-নির্ম্মিত সামগ্রী রহিয়াছে; কক্ষদ্বারে বা গবাক্ষে নীল পরদা আছে; এজন্য দিবসের আলোক অতি স্নিগ্ধ হইয়া কক্ষে প্রবেশ করিতেছে; কক্ষ নানাবিধ স্নিগ্ধ সৌগন্ধে আমোদিত হইয়াছে।

 কক্ষমধ্য নীরব, যেন কেহই নাই। একজন কিঙ্করী সুবাসিতবারিসিক্ত ব্যজনহস্তে রাজপুত্ত্রকে নিঃশব্দে বাতাস দিতেছে, অপর একজন কিঙ্করী কিছুদূরে বাক্শক্তিবিহীন। চিত্র-পুত্তলিকার ন্যায় দণ্ডায়মান আছে। যে দ্বিরদ-দন্ত-খচিত পালঙ্কে রাজপুত্ত্র শয়ন করিয়া আছেন, তাহার উপরে রাজপুত্ত্রের পার্শ্বে বসিয়া একটি স্ত্রীলোক; তাহার অঙ্গের ক্ষতসকলে সাবধানহস্তে কি ঔষধ লেপন করিতেছে। হর্ম্ম্যতলে