গালিচার উপরে উত্তম পরিচ্ছদবিশিষ্ট একজন পাঠান বসিয়া তাম্বুল চর্ব্বণ করিতেছে ও একখানি পারসী পুস্তক দৃষ্টি করিতেছে। কেহই কোন কথা কহিতেছে না, বা শব্দ করিতেছে না।
রাজপুত্ত্র চক্ষুরুন্মীলুন করিয়া কক্ষের চতুর্দ্দিকে দৃষ্টিপাত করিলেন। পাশ ফিরিতে চেষ্টা করিলেন। কিন্তু তিলাৰ্দ্ধ সরিতে পারিলেন না; সর্ব্বাঙ্গে দারুণ বেদনা।
পর্য্যঙ্কে ষে স্ত্রীলোক বসিয়াছিল, সে রাজপুত্রের উদ্যম দেখিয়া অতি মৃদু, বীণাবৎ মধুর স্বরে কহিল, “স্থির থাকুন, চঞ্চল হইবেন না।”
রাজপুত্র ক্ষীণস্বরে কছিলেন, “আমি কোথায়?”
সেই মধুর স্বরে উত্তর হইল,—“কথা কহিবেন না, আপনি উত্তম স্থানে আছেন। চিন্তা করিবেন না, কথা কহিবেন না।”
রাজপুত্র পুনশ্চ অতি ক্ষীণস্বরে জিজ্ঞাস করিলেন,—“বেলা কত?”
মধুরভাষিণী পুনরপি অস্ফূট-বচনে কহিল,—“অপরাহ্ন। আপনি স্থির হউন, কথা কহিলে আরোগ্য পাইতে পরিবেন না। আপনি চুপ না করিলে, আমরা উঠিয়া যাইব।”
রাজপুত্র কষ্টে কছিলেন,—“আর একটি কথা; তুমি কে?”
রমণী কহিল, “আয়েষা”
রাজপুত্র নিস্তদ্ধ হইয়া আয়েষার মুপ নিরীক্ষণ করিতে লাগিলেন। আর কোথাও কি ইঁহাকে দেখিয়াছেন? না; আর কখন দেখেন নাই; সে বিষয় নিশ্চিত প্রতীতি হইল।
আয়েষার বয়ঃক্রম দ্বাবিংশতি বৎসর হইবেক। আয়েষা দেখিতে পরমসুন্দর, কিন্তু সে রীতির সৌন্দর্য্য দুই চারি শব্দে সেরূপ প্রকটিত করা দুঃসাধ্য! তিলোত্তমাও পরম-রূপবতী, কিন্তু আয়েষার সৌন্দর্য্য