পাতা:দুর্গেশনন্দিনী বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তুমি না তিলোত্তমা
১২৫

 জগৎসিংহ আবার কিছুক্ষণ বিশ্রাম করিয়া কহিলেন, “বীরেন্দ্রসিংহের কি হইয়াছে?”

 “বীরেন্দ্রসিংহ কারাগারে আবদ্ধ আছেন, অদ্য তাঁহার বিচার হইবে।”

 জগৎসিংহের মলিন মুখ আরও মলিন হইল। জিজ্ঞাসা করিলেন,“অর আর পৌরবর্গ কি অবস্থায় আছে?”

 আয়েষা উদ্বিগ্ন হইলেন। কহিলেন, “সকল কথা আমি অবগত নহি।”

 রাজপুত্ত্র আপনা-আপনি কি বলিলেন। একটি নাম তাহার কণ্ঠ নির্গত হইল,—আয়েষা তাহা শুনিতে পাইলেন,—“তিলােত্তমা।”

 আয়েষা ধীরে ধীরে উঠিয়া পাত্র হইতে ভিষগ্দত্ত সুস্বাদু ঔষধ আনিতে গেলেন; রাজপুত্র তাঁহার দোদুল্যমান কর্ণাভরণসংযুক্ত অলৌকিক দেহ-মহিমা নিরীক্ষণ করিতে লাগিলেন। আয়েষা ঔষধ আনিলেন; রাজপুত্র তাহা পান করিয়া কহিলেন, “আমি পীড়ার মােহে স্বপ্নে দেখিতাম, স্বর্গীয় দেবকন্যা আমার শিয়রে বসিয়া শুশ্রূষা করিতেছেন, সে তুমি, না তিলােত্তমা?”

 আয়েষা কহিলেন, “আপনি তিলােত্তমাকে স্বপ্ন দেখিয়া থাকিবেন।”