অভাগিনীদিগের মন্দ ভাগ্য অগ্নিশিখাবৎ, যে বন্ধু নিকটে ছিলেন, তাহাকেও স্পর্শ করিয়াছে। যাহাই হউক, দাসীর এই ভিক্ষা স্মরণ রাখিবেন। যখন লোকে বলিবে বিমলা কুলটা ছিল, দাসীবেশে গণিকা ছিল, তখন কহিবেন, বিমলা নীচ-জাতি-সম্ভবা, বিমলা মন্দভাগিনী, বিমলা দুঃশাসিত রসনা-দোষে শত অপরাধে অপরাধিনী; কিন্তু বিমলা গণিকা নহে। যিনি এখন স্বর্গে গমন করিয়াছেন, তিনি বিমলার অদৃষ্ট-প্রসাদে যথাশাস্ত্র তাহার পাণিগ্রহণ করিয়াছিলেন। বিমলা একদিনের তরে নিজ প্রভুর নিকটে বিশ্বাসঘাতিনী নহে।
এত দিন এ কথা প্রকাশ ছিল না, আজ কে বিশ্বাস করিবে? কেনই বা পত্নি লইয়া দাসীবৎ ছিলাম, তাহা শ্রবণ করুন।—
গড় মান্দারণের নিকটবর্ত্তী কোন গ্রামে শশিশেখর ভুট্টাচার্যের বাস। শশিশেখর কোন সম্পন্ন ব্রাহ্মণের পুত্র; যৌবনকালে যথারীতি বিদ্যাধ্যয়ন করিয়াছিলেন। কিন্তু অধ্যয়নে স্বভাবদোষ দূর হয় না। জগদীশ্বর শশিশেখরকে সর্ব্বপ্রকার গুণ দান করিয়াও এক দোষ প্রবল করিয়া দিয়াছিলেন, সে যৌবনকালের প্রবল দোষ।
গড় মান্দারণে জয়ধরসিংহের কোন অনুচরের বংশে একটি পতিবিরহিণী রমণী ছিল। তাহার সৌন্দর্য্য অলৌকিক, তাহার স্বামী রাজসেনামঞ্চে সিপাহী ছিল; এজন্য বহুদিন দেশত্যাগী। সেই সুন্দরী শশিশেখরের নয়ন-পথের পথিক হইল। অল্পকাল মধ্যেই তাঁহার ঔরসে পতি-বিরহিতার গর্ভসঞ্চার হইল।
অগ্নি আর পাপ অধিক দিন গোপন থাকে না। শশিশেখরের দুষ্কৃতি তাঁহার পিতৃকর্ণে উঠিল। পুত্রকৃত পরকুলকলঙ্ক অপনীত করিবার জন্য শশিশেখরের পিতা সংবাদ লিখিয় গর্ভবতীর স্বামীকে ত্বরিত গৃহে