মহারাজ কহিলেন, “যখন আমার ভগিনীকে শাহজাদা সেলিমের সহিত বিবাহ দিতে পারিয়াছি, তখন তোমাকে ব্রাহ্মণকন্যা বিবাহ করিতে অনুরোধ করিব, বিচিত্র কি?”
তথাপি তিনি সম্মত হইলেন না। বরং কহিলেন, “মহারাজ, যাহা হইবার তাহা হইল। আমাকে মুক্তি দিন, আমি বিমলার আর কখন নাম করিব না।”
মহারাজ কহিলেন, “তাহা হইলে তুমি যে অপরাধ করিয়াছ, তাহার প্রায়শ্চিত্ত হইল কই? তুমি বিমলাকে ত্যাগ করিবে, অন্যজনে তাহাকে কলঙ্কিনী বলিয়া ঘৃণা করিয়া স্পর্শ করিবে না।”
তথাপি আশু তাহার বিবাহে মতি হইল না। পরিশেষে যখন আর কারাগার-যন্ত্রণা সহ্য হইল না, তখন অগত্যা অর্দ্ধসম্মত হইয়া কহিলেন, “বিমলা যদি আমার গৃহে পরিচারিকা হইয়া থাকিতে পারে, বিবাহের কথা আমার জীবিতকালে কখন উত্থাপন না করে, আমার ধর্ম্মপত্নী বলিয়া কখন পরিচয় না দেয়, তবে শূদ্রীকে বিবাহ করি, নচেৎ নহে।”
আমি বিপুলপুলকসহকারে তাহাই স্বীকার করিলাম। আমি ধন গৌরব পরিচয়াদির জন্য কাতর ছিলাম না। পিতা এবং মহারাজ উভয়েই সম্মত হইলেন। আমি দাসীবেশে রাজভবন হইতে নিজভর্ত্তৃভবনে আসিলাম।
অনিচ্ছায়, পরবল-পীড়ায়, তিনি আমাকে বিবাহ করিয়াছিলেন। এমন অবস্থায় বিবাহ করিলে কে স্ত্রীকে আদর করিতে পারে? বিবাহের পরে প্রভু আমাকে বিষ দেখিতে লাগিলেন। পূর্ব্বের প্রণয় তৎকালে একেবারে দূর হইল। মহারাজ মানসিংহকৃত অপমান সর্ব্বদা স্মরণ করিয়া আমাকে তিরস্কারও করিতেন, সে তিরস্কার আমার আদর