পাতা:দুর্গেশনন্দিনী বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দিগ্‌গজ-সংবাদ
১৬১

 “আজ্ঞে, এখন সেই দিগ্‌গজ।”

 “আচ্ছা তাই; সেখজী, গড়ের আর কাহারও সংবাদ আপনি জানেন না?”

 ওস্‌মান রাজপুত্রের অভিপ্রায় বুঝিতে পারিয়া উদ্বিগ্ন হইলেন। দিগ্‌গজ কহিলেন, “আর অভিরামস্বামী পলায়ন করিয়াছেন!”

 রাজপুত্র বুঝিলেন, নির্ব্বোধকে স্পষ্ট স্পষ্ট জিজ্ঞাসা না করিলে কিছুই শুনিতে পাইবেন না! কহিলেন, “বীরেন্দ্রসিংহের কি হইয়াছে?”

 ব্রাহ্মণ কহিলেন, “নবাব কতলু খাঁ তাহাকে কাটিয়া ফেলিয়াছেন!”

 রাজপুত্রের মুখ রক্তিমবর্ণ হইল। ওস্‌মানকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “সে কি? এ ব্রাহ্মণ অলীক কথা কহিতেছে?”

 ওস্‌মান গম্ভীরভাবে কহিলেন, “নবাব বিচার করিয়া রাজবিদ্রোহী জ্ঞানে প্রাণদণ্ড করিয়াছেন।”

 রাজপুত্রের চক্ষুতে অগ্নি প্রোজ্জ্বল হইল।

 ওস্‌মানকে জিজ্ঞাসিলেন, “আর একটা নিবেদন করিতে পারি কি? কার্য্য কি আপনার অভিমতে হইয়াছে?”

 ওস্‌মান কহিলেন, “আমার পরামর্শের বিরুদ্ধে।”

 রাজকুমার বহুক্ষণ নিস্তব্ধ হইয়া রহিলেন। ওস্‌মান সুসময় পাইয়া দিগ্‌গজকে কহিলেন, “তুমি এখন বিদায় হইতে পার।”

 দিগ্‌গজ গাত্রোত্থান করিয়া চলিয়া যায়, কুমার তাহার হস্তধারণপূর্ব্বক নিবারণ করিয়া কহিলেন, “আর এক কথা জিজ্ঞাসা; বিমলা কোথায়?”

 ব্রাহ্মণ নিঃশ্বাস ত্যাগ করিল, একটু রোদনও করিল। কহিল, “বিমলা এখন নবাবের উপপত্নী।”

 রাজকুমার বিদ্যুদ্দৃষ্টিতে ওস্‌মানের প্রতি চাহিয়া কহিলেন, “এও সত্য?”

 ১১