পাতা:দুর্গেশনন্দিনী বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/২১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দাসী চরণে
২০৫

দেখিলেন, সর্ব্বত্রই প্রায় ঐরূপ, অবাধে দৌড়িতে লাগিলেন। বাহিরে ফটকে দেখিলেন প্রহরিগণ জাগরিত। একজন বিমলাকে দেখিয়া জিজ্ঞাসা করিল, “কে ও, কোথা যাও?”

 তখন অন্তঃপুরমধ্যে মহা কোলাহল উঠিয়াছে, সকল লোক জাগিয়া সেই দিকে ছুটিতেছিল। বিমলা কহিলেন, “বসিয়া কি করিতেছ, গোললোগ শুনিতেছ না?”

 প্রহরী জিজ্ঞাসা করিল, “কিসের গেলযোগ?”

 বিমলা কহিলেন, “অন্তঃপুরে সর্বনাশ হইতেছে, নবাবের প্রতি আক্রমণ হইয়াছে।”

 প্রহরিগণ ফটক ফেলিয়া দৌড়িল; বিমলা নির্ব্বিঘ্নে নিষ্ক্রান্ত হইলেন।

 বিমলা ফটক হইতে কিয়দ্দুর গমন করিয়া দেখিলেন যে, একজন পুরুষ এক বৃক্ষতলে দাঁড়াইয়া আছেন। দৃষ্টিমাত্র বিমল তাঁহাকে অভিরাম স্বামী বলিয়া চিনিতে পারিলেন। বিমলা তাঁহার নিকট যাইবামাত্র অভিরামস্বামী কহিলেন, “আমি বড়ই উদ্বিগ্ন হইতেছিলান; দুর্গমধ্যে কোলাহল কিসের?”

 বিমলা উত্তর করিলেন, “আমি বৈধব্য-যন্ত্রণার প্রতিশোধ করিয়া আসিয়াছি। এখানে আর অধিক কথার কাজ নাই, শীঘ্র আশ্রমে চলুন; পরে সবিশেষ নিবেদিব। তিলোত্তমা আশ্রমে গিয়াছে ত?”

 অভিরামস্বামী কহিলেন, “তিলোত্তমা অগ্রে অগ্রে আশ‍্মানির সহিত যাইতেছে, শীঘ্র সাক্ষাৎ হইবেক।”

 এই বলিয়া উভয়ে দ্রুতবেগে চলিলেন। অচিরাৎ কুটীৱমধ্যে উপনীত হইয়া দেখিলেন, ক্ণপূর্ব্বেহ আয়েষার অনুগ্রহে তিলোত্তমা