আয়েষার পত্র । ২১৭ অবিশ্বাসিনী বলিয়া নহে। মনে করিও না—আয়েষী অধীর। ওস্মান নিজ হৃদয়মধ্যে অগ্নি জালিত করিয়াছে, কি জানি আমি তোমার সাক্ষাৎলাভ করিলে, যদি সে ক্লেশ পায়, এই জন্যই তোমার সহিত সাক্ষাৎ করি নাই। সাক্ষাৎ না হইলে, তুমি যে ক্লেশ পাইবে, সে ভরসাও করি নাই। নিজের ক্লেশ–সে সকল স্বৰ্গ দুঃখ জগদীশ্বরের চরণে সমর্পণ করিয়াছি । তোমাকে যদি সাক্ষাতে বিদায় দিতে হুইত, তবে সে ক্লেশ অনায়াসে সহ করিতাম। তোমার সহিত যে সাক্ষাৎ হইল না, এ ক্লৈশও পাষাণার দ্যায় সহ করিতেছি । তবে এ পত্র লিখি কেন ? এক ভিক্ষা আছে, সেই জন্যই এ পত্র লিখিলাম। যদি শুনিয়া থাক যে, আমি তোমাকে স্নেহ করি, তবে তাহা বিস্তৃত হও। এ দেহ বর্তমানে এ কথা প্রকাশ করিব না সঙ্কল্প ছিল, বিধাতার ইচ্ছায় প্রকাশ”তইয়াছে, এক্ষণে বিস্মৃত হও । o আমি তোমারপ্রেমাকাঙ্কিণী নহি । আমি যাহা দিবার তাঙ্গদিয়াছি # তোমার নিকট প্রতিদান কিছু চাই না। আমার স্নেহ এমন বদ্ধমুল যে, তুমি স্নেহ না করিলেণ্ডু আমি মৃগী ; কিন্তু সে কথায় আর কাজ কি ! . তোমাকে অসুখী দেখিয়াছিলাম। যদি কখনও মুণী হও, মায়েষাকে স্মরণ করিয়া সংবাদ দিও। ইচ্ছা ন হয়, সংবাদ দিও না। যদি কখন অন্তঃকরণে ক্লেশ পাও, তবে আয়েষাকে কি স্মরণ করিবে ? - আমি যে তোমাকে পত্র লিপিলুম, কি ঘদি ভবিষ্যতে লিখি, তাঙ্গতে লোকে নিলা করিবে। আমি নির্দোষী, সুতরাং তাছাতে ক্ষতি বিবেচন। করিও না--যখন ইচ্ছা হইবে পত্র লিখিও । তুমি চলিলে, আপাততঃ এদেশ ত্যাগ করিয়াচলিলে। এই পাঠানের শাস্ত নহে। সুতরাং পুনৰ্ব্বর তোমার এদেশে আসাই সম্ভব। কিন্তু আমার
পাতা:দুর্গেশনন্দিনী বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/২২৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।